এতদিনে শোনা যেত মরা হাতি লাখ টাকা । অর্থাৎ হাতি জীবিত থাকলে তা তো দাম থাকবেই,  কিন্তু হাতি  যদি মরে যায় তবে তার দাম হয় লাখ টাকা । কিন্তু এবার হাতি  নিয়ে এমন একটা শোরগোল পড়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়ায়, যা নিয়ে   সারা ভারত বর্ষ মানুষের চক্ষু চড়কগাছ ।

একটা হাতির মৃত্যুকে ঘিরে এবং  সেই মৃত হাতির মাংস দিয়ে চুটিয়ে বনভোজন করা এবং তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় ঘটনাটি । ঘটেছে নাগাল্যান্ডের যুনেবোতা জেলায় । সূত্রের খবর আসামের  কাছাড় জেলার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কাঠ  বহন করার জন্য মিজোরামের এক  ব্যবসায়ী হাতিটিকে ভাড়া নেয় ।হাতির  নাম ছিল লক্ষ্মী । হাতির বয়স খুব বেশি হয়নি,  মাত্র 47 ।

কিছুদিন হাতিটিকে বড় বড় কাঠের লগ বহনের কাজে লাগানোর পর হঠাৎ করেই হাতি মারা যায় । এর পরেই শুরু হয় মৃত হাতির মাংস দিয়ে সমস্ত গ্রামজুড়ে বনভোজন । এমনকি সেই বনভোজনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট কড়া হয়েছে দেদার ।  ভাইরাল পোষ্ট গুলি দেখে  নড়েচড়ে বসেছে পশুপ্রেমীরা । অথচ বনদপ্তর এখনো চুপচাপ বসে আছে ।

সম্প্রতি একটি সমীক্ষা থেকে উঠে এসেছে হাতি দিয়ে প্রচুর পরিমাণে কায়িক পরিশ্রম করানো হয় । যার ফলে হাতি খুব দ্রুত কর্মক্ষম হারিয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হয় । এটা নিতান্তই অমানবিক একটি ঘটনা । বেঙ্গালুরুর এক বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সহপ্রতিষ্ঠাতা তত্ত্বাবধায়ক সুপর্ণা গাঙ্গুলি এই ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। হাতিদের দুরবস্থা নিয়ে ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশনও দাখিল করেছিলেন সুপর্ণা। তাঁর বক্তব্য ছিল, এই হাতিদের মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে। যে কারণে তাদের মৃত্যু হচ্ছে। ৪৭ বছর বয়সী হাতি লক্ষ্মীর মৃত্যুও মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হয়েছে বলে দাবি সুপর্ণার। মিজোরামের ওই গ্রামের বাসিন্দাদের থেকে তিনি এ কথা জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন।

অথচ অবাক করার বিষয় সারা সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এত সমালোচনার পরও চুপচাপ বসে রয়েছে বনদপ্তর । নিয়ম অনুযায়ী হাতি আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে দুই রাজ্যের বন বিভাগের আধিকারিকদের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক । কিন্তু লক্ষীকে  নিয়ে আসার  ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা বা নিয়ম মানা হয়নি । এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর অবশ্য বনদপ্তর তৎপর  হয়েছে । এই ব্যাপারে তারা তদন্ত শুরু করেছেন । তারা জানিয়েছেন,  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.