বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ একজন হিন্দু মেডিকেল কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল পাকিস্তানে । জানা গেছে, পাকিস্তানের লারকানা শহরের আসিফা ডেন্টাল মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল রুমে একজন হিন্দু ছাত্রী নমরিতা চন্দানির দেহ পাওয়া যায় । নমরিতার পরিবার অভিযোগ জানিয়েছে এটা খুনের ঘটনা ।মেডিকেল ছাত্রীর দেহটি উদ্ধারের পর থেকেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল ।
গতকাল, বুধবার নমরিতার দেহের ময়না তদন্ত হয় । ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও জানা গিয়েছে, তাঁর গলায় একটা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এমনকী তাঁর শরীরে অন্য কারও চামড়ার অংশও পাওয়া গিয়েছে। এই রিপোর্ট হাতে আসার পর, মৃতার দাদা, যিনিও পেশায় চিকিৎসক, দাবী করে বলেছেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলছি, এটা খুনের ঘটনা। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুনিকে বের করার দাবি জানাচ্ছি আমরা।”
এই ঘটনায় যুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবী করে নমরিতার পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও এলাকার বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে মোমবাতি মিছিল করেন । অনেক মানুষ যোগ দেন এই মিছিলে । তাঁদের অভিযোগ, সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর এই ধরণের অত্যাচারের ঘটনা পাকিস্তানে উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তারই খেসারত দিতে হয়েছে নমরিতা চন্দানিকে ।
সুত্রের খবর, সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি জেলায় বাস করেন নমরিতা চন্দানির পরিবার। লারকানাতে আসিফা ডেন্টাল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন নমরিতা চন্দানি । তাঁর রুমমেটরা জানিয়েছেন ঘটনার দিন, সোমবার সন্ধেবেলা হোস্টেলের ঘর ভিতর থেকে বন্ধ দেখে নমরিতাকে তাঁরা অনেকবার ডাকাডাকি করেন। কিন্তু সাড়া মেলে না। পরে জানলা কোনও ভাবে ফাঁক করে দেখা যায়, সিলিং থেকে ঝুলছেন নমরিতা। দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয় । পুলিশ এসে ময়না তদন্ত করার জন্য দেহটি থানায় নিয়ে যায় ।
নমরিতার পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, নমরিতার এমন কোন ধরনের মানসিক অবসাদ ছিল না, যার জন্য আত্মহত্যা করতে হবে । এছাড়া, নমরিতার গলায় যে গভীর ক্ষতের দাগ ছিল সেটা ওড়নার ফাঁস নয়। স্পষ্টতই কেবলের তার বা ওই জাতীয় কোনও কিছু দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। এমনকি নমরিতার শরীরের নানা জায়গায় আরও অনেক ক্ষতচিহ্ন ছিল। যা থেকে অনুমান করা যায়, এক বা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছিল নমরিতার। এমনকি মারধরও করা হয়েছিল তাঁকে। খুনের পরে গলায় ওড়নার ফাঁস জড়িয়ে গোটা ব্যাপারটা আত্মহত্যা বলে চালানো চেষ্টা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের সহ-উপাচার্য অনীলা আতাউর রহমান জানিয়েছেন ‘‘প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যার ঘটনা মনে হলেও, ছাত্রীর পরিবার সেটা মানতে নারাজ। পুলিশ তদন্ত করছে। সত্যি সামনে আসুক।’’