বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ লকডাউনের মধ্যে দিয়ে চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে ২৩শে মার্চ থেকে ২৭শে মার্চ পর্যন্ত লকডাউনের কথা ঘোষণা করলেও পরে তা বাড়িয়ে ৩১শে মার্চ অবধি করে দেন। এছাড়াও ২৪শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে সারা দেশ জুড়ে ২১ দিন লকডাউনের কথা ঘোষণা করেন। অর্থাৎ ২৪ শে মার্চ রাত ১২ টা থেকে আগামী ২১ দিন অর্থাৎ ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত দেশ জুড়ে চলবে লকডাউন।

  • এই লকডাউনের পরিস্থিতিতে সরকার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান অব্যাহত আছে এবং থাকবে। এছাড়াও সমস্ত জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। ফলে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে বেশী করে খাদ্যদ্রব্য জোগাড় করার কোনও প্রয়োজন নেই। এমনটা হলে অনেকেই নিজের দরকার টুকু মেটাতে পারবেন না।
  • কাল এই লকডাউনের আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারমন কিছু জরুরি কথা সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে কোনও ব্যাংকের ডেবিট কার্ড হোল্ডাররা এই মুহূর্তে যে কোনও ব্যাংক থেকে নিজেদের এটিএম ব্যবহার করে যতবার খুশি টাকা তুলতে পারবেন তাতে কোনও আলাদা চার্জ কাটা হবে না। এছাড়াও বর্তমানে ব্যাংকে যদি কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে শূন্য ব্যালেন্সও থাকে তবে কোনও ফাইন দিতে হবে না। আগামী ৩ মাসের জন্য সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকে এই নিয়ম চালু থাকবে।
  • কলডাউনের ফলে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আধার এবং প্যান কার্ড এর সংযুক্তিকরণের সময়সীমা। আগামী ৩০শে জুন অবধি এই সংযুক্তিকরণ করা যাবে।
  • লকডাউনের সময় যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল কেন্দ্র সরকার ১৫,০০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে আমাদের দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে এই সংকটের সময় আরও মজবুত করে তোলার জন্য। এই টাকা খরচ হবে করোনা ভাইরাসের টেস্টিং ফ্যাসিলিটির জন্য। এছাড়াও আইসলেশান বেড, ভ্যান্টিলেটরস, আইসিইউ বেড, পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট কেনার জন্য ব্যবহৃত হবে এই টাকা। এর সাথে দেশ জুড়ে প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট এবং ফ্যাসিলিটিও বাড়ানো হবে।

এছাড়াও করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ২০০ কোটি টাকার একটি ফান্ড তৈরি করেছেন যাতে সাধারণ মানুষও নিজেদের সাধ্যমত অর্থসাহায্য করতে পারেন। কারণ এই সময় কোনও অর্থমুল্যই কম নয়।

  • লকডাউনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবার সময় বার বার করে বলেন যে, আগামী ২১ দিন যে সারা দেশ জুড়ে লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী প্রভাব পরবে দেশের অর্থনীতিতে। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশের মানুষের প্রাণ রক্ষা করা প্রথম কর্তব্য। এছাড়াও অর্থমন্ত্রী এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন যে কিছু দিনের মধ্যেই একটি ইকনোমিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে যাতে এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও সুরাহা হয়।
  • আর দেশ জুড়ে লকডাউনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল যে, যারা এই লকডাউনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তাদের উদ্দেশ্যে বলা যে, লকডাউনের প্রথম দিনই রাজ্য জুড়ে ২৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিনা কারণে রাস্তায় থাকার জন্য। এবারে দেশ জুড়ে যখন এই লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে এই ব্যবস্থা আরও কঠোর হবে তা বলাই বাহুল্য।

সামনে অনেক কঠিন লড়াই। তাই সকলকে সচেতন থাকতে, সুস্থ্য থাকতে এবং সতর্ক থাকতে উপদেশ দিচ্ছেন সরকার এবং চিকিৎসকরা। সকলে একসাথে এই লকডাউনকে সমর্থন করে অর্থাৎ বাড়িতে থেকে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইটাকে সফল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, বলে মনে করছে সারা দেশ।

 

 

 

Suchandra Chakraborty is a news reporter and content writer at BongDunia. She has completed her masters from Calcutta University on Mass Communication. She has worked in mainstream media at India. Currently, she is working with BongDunia.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.