স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। সাহাবুদ্দিন। তিনি আরও বলেন, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে সরকার পদক্ষেপ নেবে।
শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম-৭১ মুক্তিযুদ্ধ’-এর ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সেক্টর কমান্ডার ফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলম, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. সারোয়ার আলী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক হারুন হাবিব বক্তব্য রাখেন।
চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সরকারি কাজগুলোকে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এবং স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে আপনি স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছেন। এই আন্দোলনের মধ্যস্থতাকারী ও নেতা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এটা অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক খেলা হয়েছে এবং অনেক নেতা এসেছেন। কিন্তু এই খেলায় বিজয়ী হলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। একটানা রাজনীতি করতে জানতেন। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা ছিলেন, তিনি মানুষের মনের কথা বুঝতেন ও জানতেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষা বাংলা অর্জনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে দুরূহ যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল। শৈশবেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত মানবতাবাদী। যারা ক্ষুধার্ত তাদের খাবার দিলেন। প্রতিটি পদে তিনি বাঙালি চেতনা লালন করেছেন। তার অসাম্প্রদায়িক চেতনা, জাতীয়তাবোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ সবই সমান। আঙুলের ডগায় সব জাতি একত্রিত হয়েছে এমন উদাহরণ আমরা পৃথিবীতে খুঁজে পাই না। দীর্ঘ সংগ্রামের পর বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত স্বাধীনতা পেলেও স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। তারা এখনও সক্রিয়। তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা এটা করেছিল। তাই সবাইকে সতর্ক ও সতর্ক থাকতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলার মাটিতে সংঘটিত গণহত্যা ছিল বিংশ শতাব্দীর জঘন্যতম গণহত্যা। 1971 সালের 13 জুন সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য সানডে টাইমস’-এ গণহত্যার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ আজ একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করতে হবে।