মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে ভয়াবহ লড়াইয়ের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে রোহিঙ্গারা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সীমান্ত তাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
এমন পরিস্থিতিতে মানবিক কারণে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকায় আসা শতাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে জাতিসংঘ। তবে বাংলাদেশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নতুন কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বুধবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে সীমান্তের ওপারে অপেক্ষমাণ রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। সে সময় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু বৈঠকে বলা হয়, তার অনুরোধ রাখা সম্ভব নয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি সুম্বল রিজভী টাস্কফোর্সের বৈঠকে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য দুই দেশের মধ্যে ১৯টি সীমান্ত পয়েন্টে অপেক্ষারত প্রায় ৯০০ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। মানবিক কারণে অপেক্ষমাণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলাদেশ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তাই রোহিঙ্গাদের আবার আশ্রয় দিতে জাতিসংঘকে পরামর্শ দেওয়ার দরকার নেই। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, যতদিন রাখাইনে গৃহযুদ্ধ চলবে ততদিন রোহিঙ্গাদের ফেরার সুযোগ থাকবে না।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের অবস্থান স্পষ্টভাবে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কারণ, এই সময়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা নানাভাবে বাংলাদেশের জন্য সংকট তৈরি করেছে। ফলে বাংলাদেশের আর রোহিঙ্গাদের থাকার সুযোগ নেই।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে সাধারণত রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় নেওয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়, নীতি বাস্তবায়ন ও করণীয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। তবে বুধবারের বৈঠকে মূলত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের গৃহযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি, বাংলাদেশে এর প্রভাব এবং আগামী দিনে কোথায় ফোকাস করা উচিত তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।