ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দিল্লি যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে পররাষ্ট্র দফতরের পরামর্শ বৈঠক ছাড়াও, পররাষ্ট্র সচিব দিল্লিতে ৯০টি দেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতদের, যারা সেখান থেকে বাংলাদেশের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত, ঢাকার অগ্রগতি সম্পর্কে ব্রিফ করবেন।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব এ কথা বলেন। দুই দেশের যৌথ পরামর্শক বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কোনো রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে ভারতে যাচ্ছেন নাকি বিদ্যমান রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল পররাষ্ট্র সচিবের কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, সমান করতে পারবেন। গত এক বছরে আমরা সাধারণত অগ্রগতি করেছি। তার মধ্যে একটি হল সংলাপ এবং আমরা নির্বাচনের পরে বা আগামী বছর কিছু জায়গায় আরও জোর দিতে পারি। সময় নষ্ট করবেন না, বিশেষ করে যোগাযোগে। তারা বিদ্যমান থাকতে পারে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, অপ্রয়োজনীয় অন্য কোনো গোপন এজেন্ডা আছে বলে আমি মনে করি না। যেহেতু নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তাদের দিক থেকে কিছু জানার থাকলে জানাতে পারব। তবে প্রধানমন্ত্রীর ভিন্ন কোনো বার্তা নিয়ে যাচ্ছি না।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার আমন্ত্রণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর শুক্রবার দিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈঠকে ঢাকায় মাসুদ বিন মোমেন এবং দিল্লির জন্য বিনয় কোয়াত্রা নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
চলতি বছরে দুইবার এফওসি করার কারণ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, রিভিউ করতে যেতে পারি। কোথাও একাধিক বার (FOC) না থাকার কথা বলা হয়নি। বছরের শুরুতে এমনটা হয়েছিল, এখন বছরের শেষের দিকে আবার ঘটছে। অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এটা নিয়মিত মেকানিজম। আমরা সেখানে উভয় দেশের সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। ভারতের সাথে আমাদের বৈঠকে রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, সংযোগ, শক্তি, শক্তি এবং অভিন্ন নদী, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহায়তা, উন্নয়ন সহায়তা, কনস্যুলার সহযোগিতার ওপর আলোকপাত করা হবে। এর বাইরে আরও আলোচনা হতে পারে।
মাসুদ বিন মোমেন এজেন্ডার শুরুতে রাজনীতিকে রাখেন। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন রয়েছে। আমাদের এখানে নির্বাচন আছে। দুই দেশের মধ্যে প্রাক এবং নির্বাচন-পরবর্তী সম্পর্ক অনেকটাই বহুপাক্ষিক সম্পর্ক; এখানে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা – নির্বাচনের পরেও এগুলো সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে।
মাসুদ বিন মোমেনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এই সফরকে রাজনৈতিক সফর বলা যায় কি না। জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিতে জানি না। আমি মনে করি নিয়মিত বৈঠকটি এমনই হবে। এটা সত্য যে নির্বাচন আমাদের সামনে।
পররাষ্ট্র সচিবের বক্তৃতায় নির্বাচন-পরবর্তী পরিকল্পনা প্রকাশ পায়। অগ্রিম পরিকল্পনা আরও দুঃসাহসিক হয়ে উঠলে নীতিতে পরিবর্তন এসেছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক – বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং যোগাযোগ – অপরিবর্তনীয়। আমি এখানে ক্ষমতার পরিবর্তনের মধ্যে কোনো সংযোগ দেখতে পাচ্ছি না।
পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত তৃতীয় দেশের বিষয়গুলো দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আলোচনা হয় না। তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হলে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু সাধারণত তৃতীয় দেশ নিয়ে আলোচনা হয় না।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এ মুহূর্তে তা বলতে পারছি না।
পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য ও নৌ মন্ত্রকের আধিকারিকরা দিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন।
দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে পররাষ্ট্র দফতরের পরামর্শ বৈঠক ছাড়াও পররাষ্ট্র সচিব দিল্লিতে নিযুক্ত ৯০টি দেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতদের, যারা সেখান থেকে বাংলাদেশের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত, ঢাকার অগ্রগতি সম্পর্কে ব্রিফ করবেন।