সংগৃহীত ছবি


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা নদীর উপর সেতুর উদ্বোধনের পর এটিকে ‘স্বপ্ন সত্যি’ বলে অভিহিত করেছেন, যার নীচে রেল সংযোগ চালু হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ গড়ার পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বাঙালির ভাগ্য নিয়ে কারও খেলা করা উচিত নয়।’

ডবল ডেকার পদ্মা সেতুতে সড়ক চলাচলের উদ্বোধনের দেড় বছর পর মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্টেশন থেকে বহুল প্রতীক্ষিত রেল সংযোগের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সকালে গাড়ির বহরে সড়কপথে মাওয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে মাওয়া স্টেশনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১টার কিছু আগে তিনি ট্রেনে ওঠেন। দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে তাদের বহনকারী ১৪ বগির ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙার অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। 54 মিনিট পর গন্তব্যে পৌঁছলাম দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে।

জাতির পিতার আদর্শে বাংলাদেশ বিশ্বে এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাঙালি জাতির ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, বাংলাদেশের মাথা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া রেলস্টেশনে আয়োজিত সুধী সমাবেশে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। নতুন রেল সংযোগের জন্য নির্মিত মাওয়া রেলস্টেশন এলাকায় এক সমাবেশে পদ্মা রেল সংযোগ উদ্বোধনের ঘোষণা দিতে ট্রেনে ওঠেন শেখ হাসিনা।

ট্রেনে ওঠার আগে তিনি কাউন্টার থেকে টিকিট কেনেন যেভাবে একজন সাধারণ মানুষ টিকিট কেনেন। তারপর শেখ হাসিনা ট্রেনে উঠেন, হুইসেল বাজিয়ে পতাকা নেড়েছিলেন; বাণিজ্যিক ট্রেন ব্রেক করে রওনা দিল।

পদ্মা বাধা আগেই জিতেছে বাংলাদেশ। 25 জুন, 2022 এ সেতুটি উদ্বোধনের পরের দিনই যান চলাচল শুরু হয়। মানুষ উত্তেজিত।

তবে পদ্মা জয় সেই দিনের কাজের অর্ধেক মাত্র। কারণ সড়ক সেতুর নিচে রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে দুটি সেতু একসঙ্গে খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে বিভিন্ন কারণে রেলের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

সড়ক সেতু চালু হওয়ার ১০ মাস পর রেলওয়ে সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার পর ৪ এপ্রিল প্রথমবারের মতো একটি পরীক্ষামূলক ট্রেন সেতুটি অতিক্রম করে। ৭ সেপ্টেম্বর ওইদিন একটি গ্যাং গাড়ি সেতু পার হওয়ার তিন মাস পর কমলাপুর থেকে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতু পার হয়। দুই ঘণ্টারও কম সময়ে ভাঙ্গা পৌঁছে যান তিনি। পদ্মা সেতু পার হতে সময় লাগে প্রায় আট মিনিট।

ওইদিন থেকে পুরো পদ্মাবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল এই রেল সেতুর উদ্বোধনের। প্রধানমন্ত্রীর এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সেতুর দুই পাশে ছিল তৎপরতা।

উদ্বোধনের পর ট্রেনটি পদ্মা নদী পার হওয়ার সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশ টেলিভিশনকে তার অনুভূতির কথা জানান।

২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘স্মার্ট জনসংখ্যা, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ- এগুলো আমরা গড়ে তুলব। এটা আমাদের লক্ষ্য।

পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মামলা। ইউনূসের নাম না করে তিনি বলেন, ‘একজন ভদ্রলোক। হ্যাঁ, তিনি সারা বিশ্বে পরিচিত। কিন্তু বয়সের কারণে তিনি কোনো ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে পারবেন না জানিয়ে বিশ্বব্যাংক তার পক্ষে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এরপর আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করব। ইনশাআল্লাহ, আমরা এটা করেছি।

জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণের ‘বাঙালিকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না’-এর অদম্য মন্ত্রের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা দেখিয়েছি যে আমরা বিদেশি অর্থায়নে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম। ‘আমি আবারও প্রমাণ করেছি যে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ তাদের দাবি করতে পারবে না।’

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ যারা ভোটের কথা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেন- আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই এদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। আর যারা প্রতিদিন নির্বাচনের ধুম পড়ে আমাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় তারা কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। কারণ তারা একটি অবৈধ দখলদার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং ভোট চুরি ছাড়া কখনোই ক্ষমতায় আসেনি। এ কারণেই ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারপর থেকে তারা নির্বাচন বর্জন করে আসছে, নির্বাচন কারচুপি, অগ্নিসংযোগ, মানুষ হত্যা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলা- এই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।’

‘রেলপথে পদ্মা নদী পারাপার, আজ সেই স্বপ্ন পূরণের দিন’ উল্লেখ করে তিনি চলমান বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষাপটে সব অনুর্বর জমি চাষের আওতায় এনে সার্বিক উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য কারো সামনে হাত ছড়ানো বা মাথা নত করা নয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ বিশ্বের দরবারে সম্মানের সাথে হাঁটবে।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও বলেন, বাংলাদেশে একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। তার সরকার এর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে 840,000 ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমি ও বাড়ি দিয়েছে। জেলার সব উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দেশকে উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়া হয়। ২.৫ কোটি শিক্ষার্থী বৃত্তি পাচ্ছে। যাতে দেশ এগিয়ে যায়। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। আমি ল্যাবের মাধ্যমে কম্পিউটার শেখাচ্ছি। লার্নিং এবং আর্নিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে 6 টার্গেটেড ফ্রিল্যান্সারকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড সুবিধা সম্প্রসারিত হওয়ায় তারা সারাদেশের বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘরে বসে কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর পর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে। দায়িত্ব গ্রহণের পর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেল যোগাযোগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে আমরা ট্রেন চলাচল শুরু করি। কিন্তু 2001 সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে রেলপথ সংস্কার শুরু করে। অনেক রেললাইন বন্ধ হয়ে যায়। 2009 সাল থেকে ক্রমাগত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর, আমরা রেলওয়ে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা ও কার্যক্রম হাতে নিয়েছি এবং 2011 সালে একটি পৃথক রেল মন্ত্রণালয় গঠন করেছি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ৮৭৩ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করেছে। 280 কিমি মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করা হয়েছে এবং 1,391 কিলোমিটার লাইন পুনর্বাসন বা পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। এই সময়ে আমরা ১ হাজার ৩৭টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ করেছি এবং ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন বা পুনর্গঠন করেছি এবং ১৪৬টি নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ করেছি এবং ২৩৭টি স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ করেছি।

দেশের রেল যোগাযোগের উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রেলের সার্বিক উন্নয়নে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে ১১১টি লোকোমোটিভ, ৬৫৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন, ৫১৬টি পণ্যবাহী ওয়াগন, ৫০টি পণ্যবাহী ভ্যান সংযুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন রুটে মোট ১৪৩টি নতুন ট্রেন চালু হয়েছে। 134টি স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম উন্নত ও আধুনিক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তার সরকার অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রেল সংযোগ বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ডুয়েল গেজ এবং ব্রডগেজ উভয় রেল নেটওয়ার্ক তৈরি করছে। যাতে রেলওয়ে মালবাহী এবং যাত্রী পরিবহনে আরও সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 46টি নতুন ব্রডগেজ লোকোমোটিভ, 460টি নতুন ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ, 200টি নতুন মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ, 1 হাজার 310টি নতুন ওয়াগন কেনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ আরও বাড়বে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের যে প্রকল্পটি ভাঙ্গা পর্যন্ত করা হয়েছে, সেটি হবে ভাঙ্গা থেকে যশোরের সংযোগ। এবং যশোর থেকে মংলা বন্দরের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। এমনকি বরিশাল, পটুয়াখালী থেকে পেরা পর্যন্ত এই রেললাইনটি যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সেখানে নরম মাটির কারণে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকলেও এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশকে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সাথে সংযুক্ত করা।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশে সবকিছুই স্মার্ট হওয়া নিশ্চিত করা। শেখ হাসিনা বলেন, রেললাইন ছাড়াও এই প্রকল্পে ওয়েটিং রুম, নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা টয়লেট, লিফটসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে এক্সিলারেটর ও বেবি কেয়ার কর্নার নির্মাণ করা হয়েছে। সুবিধা সহ 14টি নতুন স্টেশন। ৬টি রেলস্টেশন আপগ্রেড করা হচ্ছে। 60টি বড় সেতু, 144টি কালভার্ট, 128টি আন্ডারপাস ইতিমধ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে। 20টি স্টেশনে আধুনিক কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় একটি দৃষ্টিনন্দন ও বিশাল ওভারহেড স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। স্টেশন এলাকায় এবং ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশে ১০ লাখের বেশি ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৯টি জেলা- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরকে সংযুক্ত করবে। প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে ভাঙা অংশের কাজ শেষ করে তিনটি নতুন জেলা- মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে।

রেলমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নুরুল ইসলাম সুজন। বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য (মুন্সীগঞ্জ-২) সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়। মো. স্বাগত বক্তব্য রাখেন হুমায়ুন কবির। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। কামরুল আহসান ও প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী এ রুটে ট্রেনের উদ্বোধন করলেও ট্রেনে উঠতে যাত্রীদের তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। ট্রেনটির তিনটি রুট ঢাকা থেকে খুলনা, ঢাকা থেকে যশোরের বেনাপোল এবং রাজশাহী থেকে রাজবাড়ীর গোলন্দ পর্যন্ত ১ নভেম্বর ঢাকা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।

এক নজরে পদ্মা রেল সেতু: পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগ বর্তমান সরকারের একটি বড় যোগাযোগ অবকাঠামো প্রকল্প। বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এদিকে, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮৩%। তবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের পুরো কাজ শেষ হওয়ায় গত ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেকশনে রেললাইনের উদ্বোধন করেন।

পুরো প্রকল্পটি জুন 2024 সালের মধ্যে শেষ হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পদ্মা সেতু হয়ে নড়াইল হয়ে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও যশোর হয়ে ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হবে নতুন চারটি জেলা। এ ছাড়া বিদ্যমান ভাঙ্গা-পাচুরিয়া রাজবাড়ী রেলপথ পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হবে।

এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ এই রেলপথের সুবিধা পাবে। যশোর পর্যন্ত রেলপথের কাজ শেষ হলে পদ্মা সেতু পর্যন্ত রেল যোগাযোগের কাজ শেষ হবে। ফলে ঢাকা থেকে রেলপথে ফরিদপুর, বাগেরহাট, যশোর যাওয়া সম্ভব হবে। যাত্রী ও পণ্য বিতরণের পরিধি বাড়ানো হবে। খুলবে পর্যটনের নতুন দিগন্ত।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.