কক্সবাজার-দোহজারী রেললাইন উদ্বোধন করা হবে ১২ নভেম্বর। গতকাল (শনিবার) রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বৈশাখী টেলিভিশনকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, উদ্বোধনের পর কক্সবাজার সারাদেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে।
উদ্বোধনের আগেই কালুরঘাট রেলসেতুর সংস্কার কাজ শেষ করা হবে বলেও জানান তিনি। আগামী ৯ নভেম্বর খুলনা-মংলা রেললাইন উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ১২ নভেম্বর সময় দিয়েছেন। কক্সবাজারের রেললাইন পুরো বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ চলছে। এই সেতু দিয়ে ইঞ্জিন বগি পরিবহন করা হয়। উদ্বোধনের আগেই সংস্কার কাজ শেষ হবে।
,
সরকার ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু থেকে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প শুরু করে। প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩১ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্পের বাকি অংশের কাজ এখনো শুরু হয়নি। প্রকল্পের আওতায় ৯টি রেলস্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। 149টি বক্স কালভার্ট এবং 52টি গোল কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। লেভেল ক্রসিং আছে ৯৬টি।
চীনের দুটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিআরইসি) এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি) প্রকল্পটি নির্মাণ করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডও এ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত।
এই প্রকল্পটি 2010 সালে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছিল। 2018 সালে সব জটিলতা কাটিয়ে প্রকল্প নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করে। ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্পটি 2022 সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু 2024 পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাকি চার হাজার ৯১৯ কোটি সাত লাখ টাকা দেওয়া হবে সরকারি তহবিল থেকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরো রেললাইন নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এবং অক্টোবরের মাঝামাঝি যাত্রী পরিবহন। কিন্তু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত ছাড়াও পুরো কাজে সময় লাগে। একই সঙ্গে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।