সংগৃহীত ছবি


চীনের প্রেসিডেন্টকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিয়ারবকের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে চীন। বেইজিংয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চীনের অনেক পদক্ষেপ পশ্চিমা বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পারস্পরিক নির্ভরতার ক্ষেত্রে বড় কোনো পরিবর্তন না হলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে শান্ত রয়েছে।

বিশেষ করে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর চীন যেভাবে মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে তা প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক নেতাই কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভুলে প্রকাশ্যে শি জিনপিংয়ের সমালোচনা করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের পর সম্প্রতি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বিয়ারবক শি জিনপিংকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেছেন।
বলাই বাহুল্য, সর্বোচ্চ নেতা সম্পর্কে এমন মন্তব্য চীন পছন্দ করে না।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে দেশটি, দেশটি বেইজিংয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া ফ্লোরকে তলব করেছে৷ সোমবার রাতে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ খবর দিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এ দিন বলেছেন যে বিয়ারবকের মন্তব্য অত্যন্ত অনুপযুক্ত এবং চীনের রাজনৈতিক অবস্থানকে গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করেছে। এ ধরনের ‘প্রকাশ্য রাজনৈতিক উসকানি’রও নিন্দা করেন তিনি।

মাও আরো বলেন, বিয়ারবকের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে চীন কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে জার্মানির সাথে যোগাযোগ করেছে।

14 সেপ্টেম্বর, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিয়ারবক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় টেক্সাস রাজ্যে ফক্স নিউজ নেটওয়ার্ককে একটি সাক্ষাত্কার দেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার মন্তব্য করে তিনি প্রশ্ন তোলেন যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধে জয়ী হলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মতো বিশ্বের ‘একনায়কদের’ কাছে কী বার্তা দেবে? বেয়ারবক আরও বলেছেন যে ইউক্রেনকে এই কারণে এই যুদ্ধে জিততে হবে। তার মতে, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দিতে হবে। সোমবার চীনের কড়া প্রতিক্রিয়ার পর তিনি শুধু বলেছিলেন যে তিনি এ বিষয়ে সচেতন।

সম্প্রতি চীনের সঙ্গে জার্মানির রাজনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা শীতল হচ্ছে৷ এই বছরের জুলাইয়ে, জার্মান সরকার প্রথমবারের মতো চীনের প্রতি তার কৌশলগত অবস্থানের একটি নথি প্রকাশ করেছে। এটি চীনের উপর নির্ভরতা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরিবর্তে ঝুঁকি এড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। চীনের মূল্যবোধ ও স্বার্থকে ক্ষুণ্ন না করে তার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথাও বলা হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জার্মানির অবস্থানের সমালোচনা করেছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ চীনা প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিয়ারবকের মন্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানাননি। একজন সরকারী মুখপাত্র বলেছেন যে জার্মান চ্যান্সেলর তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের মন্তব্যকে নীতিগতভাবে মূল্যায়ন করেন না।

তিনি আরও বলেন, এটা মনে রাখতে হবে যে চীন একদলীয় কমিউনিস্ট শাসনের অধীনে রয়েছে। জার্মানির গণতন্ত্রের ধারণার সঙ্গে সেই ব্যবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে জার্মান চ্যান্সেলরও বিয়ারবকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের সাথে একমত কিনা সে বিষয়ে জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেননি।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.