বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ বর্তমান দুনিয়ায় সুগার বা ডায়াবেটিস একটি বড় সমস্যা । ডায়াবেটিস বা সুগারের রোগীদের নিয়মিত ঔষধ খেতে হয় । কিন্তু অনেক সময় সুগারের লেভেল আচমকা নিচে নেমে যায় । এর ফলে অনেক সমস্যা হতে পারে । সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কিছু নিয়ম পালন করা উচিৎ । দেখে নেওয়া যাক, সুগারের লেভেল হঠাৎ করে নিচে নেমে গেল কি করনীয় !
সুগার লেভেল নেমে গেলে কি করতে হবে জানার আগে দেখতে হবে সুগার লেভেল যে নিচে নেমে গেছে সেটি কিভাবে বা কি কি লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে ? আচমকা সুগারের লেভেল যদি খুব বেশী নিচে নেমে যায়, এবং সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা যদি না দেওয়া যায় তাহলে রোগী মারা পর্যন্ত যেতে পারে । তাছাড়া হাতের কাছে ডাক্তার বা হসপিটাল যে সমসময়ই পাওয়া যাবে তা কিন্তু নয় ।
সুগার লেভেল নিচে নেমে যাবার লক্ষণঃ
হঠাৎ করে সুগারের লেভেল নিচে নেমে গেলে রোগীর খিদে পাবে খুব বেশী । অনেক সময় খিদে না পেলেও চিন্তা, উদ্বেগ, হাত পা কাঁপার মত ঘটনা দেখা যাবে । সারা শরীরে বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখা যাবে । এমনকি রোগীর দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে । এই সময় সব কিছু ঝাপসা দেখতে পারে রোগী । এছাড়া, হঠাৎ করে ক্লান্তভাব দেখা দেবে শরীরে । এই প্রাথমিক লক্ষণ ছাড়াও রোগীর ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে । মাথা যন্ত্রণা শুরু হতে পারে ।
আরও পড়ুনঃ- হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ, হার্ট অ্যাটাকের আগে নিজেদের শরীর কিভাবে সিগন্যাল দেয় ?
সুগার লেভেল নিচে নেমে গেলে কি করনীয়ঃ
প্রথম টিপসঃ যদি উপরের লক্ষণগুলির সাথে কোন সুগারের রোগীর মিলে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সুগারের লেভেল নেমে হেছে আচমকা । সেক্ষেত্রে সাথে সাথে তাকে এক চামচ চিনি খাইয়ে দিতে হবে । চিনি ছাড়াও গ্লুকোজ জল, বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খাওয়াতে হবে । এর ফলে খুব তাড়াতাড়ি রোগীর সুগার লেভেল কিছুটা উপরে উঠে আসবে ।
দ্বিতীয় টিপসঃ চিনি ছাড়াও গুড়ও সুগার লেভেল বাড়ানোর জন্য কার্যকারী ভূমিকা পালন করে । সেক্ষেত্রে এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে এক চামচ পরিমাণ গুড় গুলে খাওয়াতে হবে । এছাড়াও যদি সুগার বাড়া বা কমার প্রবণতা থাকে তাহলে দিনে দু’বার করে নিয়ম খাওয়াতে হবে ।
তৃতীয় টিপসঃ চিনি বা গুড় ছাড়াও টম্যাটো সুগার নিয়ন্ত্রনের জন্য একটি কার্যকারী উপাদান । টম্যাটোতে থাকে লাইকোপিন নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান । এটি মানব শরীরের যকৃত আর অগ্ন্যাশয়ের সমস্যাকে দূর করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে ।আর অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা কিন্তু অনেকসময়েই লো ব্লাড সুগারের কারণ হয়।তাই আচমকা সুগার ফলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত টম্যাটো খাওয়াতে পারেন । দুই তিন সপ্তাহে রোগীর আচমকা সুগার লেভেল কমে যাবার প্রবণতা কমে যাবে ।
চতুর্থ টিপসঃ ফলের মধ্যে আপেল সুগারের রোগীদের জন্য ভাল । আপেলে প্রচুর পরিমাণে ক্রোমিয়াম আর ম্যাগনেসিয়াম থাকে । এই উপাদান রক্তে সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। খালি পেতে ফল না দিয়ে খাওয়ার পর রোগীকে দিনে একটা বা দুটো আপেল খেতে দিন ।
পঞ্চম টিপসঃ আপেল ছাড়াও যে খাবারগুলি খাবেন তাতে যেন বেশী করে ক্রোমিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি মিনারেলস, ভিটামিন, ফাইবার ইত্যাদি থাকে । খাবারের মধ্যে, কড়াইশুঁটি, অয়েস্টার, হোল হুইট ব্রেড, টুনা, কলা, বার্লি,দুধ, দই, কাঠবাদাম, কাজু, বিনস, ব্রকোলি, সয়াবিন, পালংশাক, মিষ্টি আলু, মাশরুম, চিকেন ইত্যাদি খেতে পারেন।
তবে প্রাথমিক চিকিৎসায় হঠাৎ করে সুগার লেভেল নেমে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পাশাপাশি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিৎ । ডায়েট কন্ট্রোল করা ছাড়াও নিয়ম করে জল খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, হালকা ব্যায়ামের দিকে নজর দিন ।