বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ CAA, NCR নিয়ে প্রতিবাদী আন্দোলন বেশ কয়েকদিন ধরে ঝিমিয়ে আসছিল । ক্রমশ মানুষের আগ্রহ কমে আসছিল এই আন্দোলন নিয়ে । এবার ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চলেছে আবার সেই আন্দোলন । কারন, এর আগে সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশের পর তিন দিন ধরে যখন বাংলায় ধুন্ধুমার হয়েছিল, তখন রাজ্যের মন্ত্রী তথা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বই সংযত থাকতে বলেছিলেন। ফলে এতদিন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর পার্টি জমিয়তে উলেমা CAA-র বিরুদ্ধে বড় কোনও আন্দোলন কর্মসূচিতে নামেনি। কিন্তু সুত্রের খবর, তীব্র আন্দোলনে নামতে চলেছে জমিয়তে উলেমা ।
গতকাল রাজ্যের শাসকদল তৃনমূলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, CAA নিয়ে গণ অবস্থান আবার শুরু হবে । সেই গণ অবস্থানের পৌরোহিত্য করবেন মমতা মন্ত্রিসভার সদস্য মওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। -পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, “জমিয়ত যেহেতু বরাবর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে, এই প্রতিবাদ কর্মসূচিও শান্তিপূর্ণ হবে।” ফলে এতদিন জমিয়তে উলেমা রাস্তায় না নামলেও এবার আশঙ্কা করা হচ্ছে সিদ্দিকুল্লার নেতৃতে তীব্র আন্দোলন শুরু হতে চলেছে রাজ্যে ।
জানা গেছে, জমিয়তে উলেমার শীর্ষনেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকেই এবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ডেকে জানিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে তাঁদের শীঘ্র আন্দোলনে নামতে হবে। তবে অশান্তি করলে চলবে না। আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ। কথা মাত্র কাজ। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি এই তিন দিন এন্টালির রামলীলা ময়দানে গণঅবস্থান করতে চলেছে জমিয়তে উলেমা।
সংসদে এবং রাজ্যসভায় পাশ হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে ত্রিপুরা এবং আসাম প্রতিবাদে রাস্তায় নামে । বাম ছাত্র সংগঠনগুলি মুলত এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল প্রথম । কিন্তু তারপরেই গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে সেই আন্দোলনের ঢেউ । এরপর টানা তিনদিন ধরে প্রতিবাদের নামে রাজ্যে রীতিমত তাণ্ডব শুরু হয়ে যায় । এমনকি স্টেশন ভাংচুরের পাশাপাশি গোটা ট্রেন জ্বালিয়ে দেবার মত বড় ঘটনা ঘটতে দেখেছে সকলে । সেখানে জমিয়তের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল উঠেছিল।
তৃনমূলের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জমিয়তে উলেমার প্রধান সিদ্দিকুল্লাকে আন্দোলনে নামার নির্দেশ জারি করায় এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে । হঠাৎ জমিয়ত তথা সিদ্দিকুল্লাকে কেন সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার কথা বললেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব? অনেকের ধারনা, প্রধানমন্ত্রীর সাথে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজভবনে সৌজন্য সাক্ষাত নিয়ে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে বেশ ভুল অসন্তোষ দানা বেঁধেছে । আগামী দিনে এই অসন্তোষ ভোটের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
জমিয়তের এক মুখপাত্রের অবশ্য বক্তব্য, কারও নির্দেশ বা পরামর্শে তাঁরা গণঅবস্থানে বসতে যাচ্ছেন না। জমিয়েত উলেমা একটি স্বাধীন সংগঠন। গত ২২ ডিসেম্বর কলকাতায় তারা নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই বড় সভা করেছিল। তার পর সংগঠনের মধ্যেই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ২৩ তারিখ থেকে তিন দিনের গণঅবস্থান রামলীলা ময়দানে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ২২ জানুয়ারি নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা করার কথা।