অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও ঘটনাটা সত্যি । কোন লাইফ জ্যাকেট বা কোন অবলম্বন ছাড়াই শুধুমাত্র মনের জোরে প্রায় পাঁচ দিন ধরে উত্তাল সমুদ্রে ভেসে থাকলেন নামখানার একজন ধীবর – নাম রবীন্দ্রনাথ ওরফে কানু দাস ।10 জন মৎস্যজীবীর সাথে ট্রলারে করে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান কানু দাস । গত শনিবার বাংলাদেশ জল সীমান্তের কাছাকাছি বিশাল আকারের ঢেউয়ের সম্মুখীন হয় তাদের ট্রলার । এক সময় উত্তাল ঢেউয়ের কাছে পরাজিত হয়ে তাতে ট্রলার উল্টে যায় ।
এরপর বাকিটা কল্পনার গল্প গাথাকেও হার মানিয়ে দেবে । তাদের ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর কোনরকম লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই জলে ভেসে থাকে কানু দাস । সমুদ্রের স্রোত সাড়ে চার দিন ধরে তাকে টেনে নিয়ে গেল শুধু চট্টগ্রামের উপকূলে। সেখানে একটি পণ্যবাহী জাহাজের নাবিকরা তাকে জলে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায় এবং উদ্ধার করে ।
সরকারি ভাবে তাদের ট্রলার দুর্ঘটনার কথা দক্ষিণ 24 পরগনার প্রশাসন ঘোষনা করেছিল । সেখানে নিখোঁজের তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ওরফে ওরফে কানু দাস এর নাম ছিল । কানুকে যে জাহাজটি উদ্ধার করে সেটি চট্টগ্রামের এস আর শিপিং এর জাহাজ । সেই জাহাজের ক্যাপ্টেন এস এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল 11 টা নাগাদ উত্তাল সাগরে একজনকে ভাসতে দেখেন তিনি । সে যে বেঁচে রয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছিল । জাহাজ থেকে বয়া ও লাইফ জ্যাকেট ছুড়ে দেওয়া হয় । কানু জ্যাকেটটি ধরতে পারলেও বয়া টি ভেসে যায় । তারপর খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে জাহাজের নাবিকরা কানুকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে ।
বেলা একটার সময় কানু কে উদ্ধার করে ডেকে তোলা হয় । উদ্ধারের সময় সে প্রায় অচেতন ছিলেন । প্রাথমিক চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে তার জ্ঞান ফেরে । বুধবার রাত পর্যন্ত জানা গেছে, ভারতীয় মৎসজীবীকে জাহাজ-ে রেখে সুস্থ করে তলার চেষ্টা করা হচ্ছে । তবে কিভাবে সাড়ে চার দিন তিনি উত্তাল সাগরে ভেসে ছিলেন, তা নিজেও বুঝতে পারছেন না । দক্ষিণ 24 পরগনা প্রশাসনের তরফ থেকে তার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে ।