বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে মসজিদ তৈরি করার জন্য মোট ৫ একর জমি নির্বাচন করল সরকার । সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কিছুটা ফাঁক থেকে গিয়েছিল । কারন সেই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, মসজিদ নির্মাণ করার জন্য অযোধ্যাতেই ৫ একর জমি দেওয়া হবে । কিন্তু সেখানে অযোধ্যা বলতে অযোধ্যা শহর না কি জেলা, সেটি উল্লেখ করা ছিল না । যোগী আদিত্যনাথ সরকার মসজিদের জন্য যে জমি নির্বাচন করেছেন সেটি অযোধ্যার রাম মন্দিরের জমি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে, লখনউ হাইওয়ের পাশে অযোধ্যার জেলার সোহাওয়াল তহশিলের ধানিনপুর গ্রামে অবস্থিত । ওই জমি জেলা সদর ফৈজাবাদ থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে।
এই জমি নিয়েই ফের বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে । প্রথম বিতর্ক কেন অযোধ্যা শহরের মধ্যেই জমি নির্বাচন করা হল না ? এবিষয়ে যোগী সরকারের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা বলেন, ”রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে তিনটি বিকল্প পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রই ধন্নীপুরের জমিটি পছন্দ করেছে।” অপর দিকে সরকারীভাবে যুক্তি দেখানো হয়েছে, খবর, অযোধ্যার সাধুরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, অযোধ্যার রামজন্মভূমি ঘিরে হিন্দুরা কার্তিক মাসে ১৪ ক্রোশ পথ পরিক্রমা করেন। পরিক্রমার পরিধির বাইরে মসজিদের জমি দিতে হবে। সেই দাবি মেনে নিয়েই ওই জমি বেছে নেওয়া হয়েছে।
মসজিদের জন্য জমি বরাদ্দ হবার পর বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে । ইতি মধ্যে, সর্বভারতীয় মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের একাধিক সদস্য আজ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা যেন এই জমি গ্রহণ না করে। এ নিয়ে, অন্যতম মামলাকারী ইকবাল আনসারি দাবি করেছিলেন, বিতর্কিত জমি ঘিরে কেন্দ্রের অধিগৃহীত ৬৭ একর জমির মধ্যেই মসজিদের জন্য জমি দিতে হবে। আনসারির যুক্তি ছিল, লোকে বলছে, চৌদ্দ ক্রোশের বাইরে গিয়ে মসজিদ করতে হবে। তা ঠিক নয়। জমি বরাদ্দ করা নিয়ে যোগী সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। বুধবার পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মৌলানা ইয়াসিন উসমানি বলেন, ‘সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড গোটা দেশের মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি নয়। তারা যদি জমি গ্রহণ করে তাহলে তা সারা দেশের মুসলিমদের সিদ্ধান্ত হিসাবে বিবেচিত হবে না।’ তিনি জানান, ‘ল বোর্ড এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিতরা ‘অযোধ্যায় কোনও জমি নেবে না।’ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড কী করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জানা গিয়েছে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি বোর্ডের মিটিং হবার কথা । সেখানেই এই বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। অন্য দিকে, উক্ত বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর ফারুকির যুক্তি, ”এ দেশের মুসলিমরা ফকির নন যে অর্থের দরকার। এটা ন্যায়ের প্রশ্ন।”
উত্তরপ্রদেশ সরকারের মুখপাত্র শ্রীকান্ত শর্মা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে যোগীর নেতৃত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের জন্য বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শ্রীকান্ত শর্মা বলেন, ‘রাজ্য সরকার জমি সংক্রান্ত তিনটি বিকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। যে জমি ওয়াকফ বোর্ডকে বরাদ্দ করা হয়েছে তাতে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য ক্যাবিনেটও সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভাল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশও যথেষ্ট ভাল।’