‘সরস্বতী পুজা’….

১৪ হোক বা ২৪, নাম’টা শুনলে একটাই দৃশ্য ফুটে ওঠে অল্পবয়সী বাঙালী মনে। সেই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে হাল্কা শীতে গা ভিজিয়ে স্নান করে অঞ্জলি দেওয়া; তারপর ছেলেদের পাঞ্জাবী আর মেয়েদের শাড়ি পরা ছবি। জিন্স, টপ, ব্লেজারে যতই চেষ্টা করুক’না কেনো, পাঞ্জাবী আর শাড়ি ছাড়া দিন’টা জমেনা। ওইদিন’ই বাঙালী তার আসল রূপে সুন্দর হয়ে ওঠে।

 

ওসব ১৪ই ফেব্রুয়ারি‘টারি আমাদের পোষায়না ভাই। আমরা বাঙালী, নিজেদের মতো করে পালন করি সব। বাঙালীর মনে ১৪ই ফেব্রুয়ারি’র চেয়েও বেশি দাগ কাটে সরস্বতী পুজো(সরস্বতী পুজা)। গোলাপ নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসা বা দামি রেস্টুরেন্ট’এ গিয়ে ট্রিট দেওয়া প্রেম নয়; বাঙালীর প্রেম রাস্তাই দাড়িয়ে ফুচকা খাওয়াই আসে, তার মাঝে “ভাই দেখ, মেয়েটা আড়চোখে বারবার তাকাচ্ছে”

 

হয়তো আগে কোনোদিন দেখেয়নি তাকে, কয়েকবার অল্প কিছু কথা সোশ্যাল মিডিয়া‘ই, তবু প্রথম দেখা যদি সরস্বতী পুজো হয় তাহলে আর দেখতে হবেনা। দুজন’ই আড়চোখে মাঝে মাঝে দেখছে দুজনের দিকে, চোখে চোখ পড়ে গেলে লজ্জায় হেসে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। পাশ থেকে সাহস দেবার জন্য গুটি’কতক বন্ধু আছেই তো সর্বক্ষণ, তাদের পরামর্শ শুনে এগিয়ে যেতে ইচ্ছা হলেও পরমুহুরতে লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখ টা লুকিয়ে নেওয়া… বাঙালী এই প্রেমে’ই অভ্যস্ত।

 

প্রতিটা গল্প এক’একটা সিনেমা। হলুদ পাঞ্জাবী পড়া ছেলেটা নায়ক সেজেছে, আর ওই যে লাল শাড়ি পড়া মেয়েটা ফুচকা খাচ্ছে নায়িকা সেজে। এমন আরও নায়ক-নায়িকা’র দল একই সাথে একই এলাকাই ঘুরে বেরাচ্ছে, আর আড়চোখে খুজছে অপরজন’কে। এভাবেই পালন করে বাঙালী তাদের অলিখিত প্রেমদিবস।

 

সারাদিন হই’চই এর শেষে সন্ধ্যাই ঘরে ফিরে শরীর এলিয়ে শুয়ে পড়া। দুজনেই তখন ক্লান্ত, তবু তারমধ্যে সকালের কথা’গুলো মনে পরতেই নিজের বোকামি’র ওপর নিজেই হাল্কা হেসে ওঠা।

 

প্রতিবছর’ই এমন নতুন নতুন প্রেমের গল্প তৈরি হয়। নিছক’ই ছেলেমানুষি, তবু এরমধ্যে কিছু গল্প কখনও কখনও পূর্ণতা পেয়ে ওঠে।

 

আসছে বছর আবার হবে….

এই হোলো বাঙালী’র ভালেনটাইন্স ডে।

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.