বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম সারির অভিজ্ঞ অভিনেতাদের মধ্যে উঠে আসে সব্যসাচী চক্রবর্তী’র নাম। নিজের গোটা কেরিয়ারে একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি, আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন নতুন এক ফেলুদা। সম্প্রতি নিজের কেরিয়ের নিয়ে মুখ খুলতে দেখা গেলো প্রখ্যাত এই অভিনেতাকে।
সারা জীবনের অর্ধেকটা সময় অভিনয়ের সাথে যুক্ত থাকার পর আজ হঠাৎ তিনি জানান, বাস্তবে কোনদিনই অভিনয়কে পেশা হিসাবে গ্রহণ করবার ইচ্ছা ছিলনা তাঁর। বর্তমানে ফাখরুল আরেফিন খান পরিচালিত ‘গন্ডি’ ছায়াছবির কাজ করতে বাংলাদেশে গিয়েছেন সব্যসাচী। সেখানেই এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার প্রথম স্বপ্ন ছিল খেলাধুলো করবো। আমার ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিলো। তারপরে ইচ্ছে হলো পুলিশ হবো। তারপরে ইচ্ছে হলো ইঞ্জিনিয়ার হবো। তখন আরেকটু বয়স বেড়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যে মার্কস দরকার সেটা আমার হলো। প্রি-মেডিকেল টেস্টের জন্যে অ্যাপ্লাই করলাম কিন্তু সেটাও ফেল করলাম। এরপর ইচ্ছা হলো ফাইটার পাইলট হবো। কারণ আমার প্লেন ভীষণ ভালো লাগতো…যুদ্ধজাহাজ চালাবো এমন একটা ইচ্ছাও ছিলো….”
তিনি আরও বলেন, “অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক আমার কখনো ছিল না। এখনও নেই। আমি একসময় একজন মিস্ত্রি হয়ে গিয়েছিলাম। ইলেকট্রো মেডিকেল ডায়াগনস্টিকসে কাজ করতাম এবং ডায়াগনস্টিক এক্সরে মেশিন নিয়ে কাজ করতাম। বাবারই একটা ছোট ফ্যাক্টরি ছিল। সেখানে কাজ করতে করতে অনেক কিছু শিখে গেলাম। মিস্ত্রিই হয়ে গেলাম। আমি তখন দিল্লিতে থাকতাম। বাবা চলে যাওয়ার পর মাকে নিয়ে দিল্লি থেকে কলকাতা চলে এলাম ১৯৮৪ সনে। তারপরে নাটক করতে শুরু করলাম, নাটকের ব্যাকস্টেইজে কাজ করবো। আমার পরিবারটাই কিন্তু নাটকের। সবাই নাটক করেন। কিন্তু আমার অভিনয় করার শখ তখনও ছিল না। বলেছিলাম সেট করবো, লাইট করবো…”
সব্যসাচী’র পিসেমশাই যোশেন্দর সিজার নাটক পরিচালনার কাজ করতেন। একারণে, নিজের ইচ্ছা না থাকলেও, পিসেমশাই একপ্রকার জোড় করেই তাঁকে অভিনয়ের মঞ্চে নামান। সেপ্রসঙ্গে অভিনেতা বললেন, “তিনি বললেন, তুমি চেষ্টা করলে পারবে এবং আলটিমেটলি আমাকে ঢুকিয়ে দিলেন সিরিয়ালে”।
সূত্র থেকে জানা যায়, ‘তেরো পার্বণ’ সিরিয়াল দিয়ে অভিনয় জগতে প্রথম যাত্রা শুরু হয় সব্যসাচী চক্রবর্তীর।
অভিনয় করার থেকে বাঁচবার জন্যও কম বাসনা করেননি অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনি জানালেন, “আমি মনে-প্রাণে চেয়েছিলাম লোকে আমাকে বর্জন করে দিক। ভালো করতে পারিনি বলে বা ভালো হচ্ছে না বলে বা ভালো দেখতে নয় বলে। কিন্তু কোনটাই হলো না। লোকের ভালো লেগে গেল এবং আমি আটকে গেলাম”।