বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ২১ শের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে রাজ্যের শাসক দল তৃনমূলে আনা হল ব্যাপক রদবদল । ‘দলের ঊর্ধ্বেকেউ নয়’, এই বার্তা দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৪টি জেলার মধ্যে ৭টি জেলার সভপতিকে সরিয়ে দিয়ে নতুন করে সভাপতি নির্বাচিত করলেন ।
মুখ্যমন্ত্রী আগেই দলের সবাইকে বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন, সবার আগে দল, দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয় । এবার বৃহস্পতিবার দলের সাংগঠনিক রদবদল করতে গিয়ে সেই বার্তাকেই প্রাধান্য দিলেন দলনেত্রী । ২৪টি জেলার মধ্যে ৭টি জেলার সভপতিকে সরিয়ে দিয়ে আগামী নির্বাচনে জেলার ভিত শক্ত করার পাশাপাশি আনলেন আরও বেশ কিছু পরিবর্তন ।
যে সাত জেলায় সভাপতি বদল করা হল, সেগুলি হল, কোচবিহার, নদীয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, হাওড়া এবং দক্ষিন দিনাজপুর । কোচবিহারের সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর জায়গায় নতুন সভাপতি হলেন পার্থপ্রতিম রায়। নদীয়া জেলার দায়িত্বে ছিলেন মহুয়া মৈত্র এবং শঙ্কর সিং । এবার পুরো দায়িত্ব মহুয়া মিত্রকে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, বাঁকুড়ায় শুভাশিস বটব্যালের জায়গায় শ্যামল সাঁতরা, ঝাড়গ্রামে বীরবাহা সোরেনের জায়গায় দুলাল মুর্মু , পুরুলিয়ায় শান্তিরাম মাহাতোকে সরিয়ে গুরুপদ টুডু, হাওড়ায় রাজীব ব্যানার্জির জায়গায় লক্ষ্মীরতন শুক্লা, এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে গৌতম দাসকে সভাপতি করা হল ।
কোচবিহারে আগের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাজকর্ম নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না দলনেত্রী । সেই জায়গায় পার্থপ্রতিম রায়ের দলের প্রতি আনুগত্য অনেক বেশি। নদীয়াতে মহুয়া মিত্রের লড়াকু মানসিকতা এবং স্বচ্ছ ইমেজকে কাজে লাগাতে চান মমতা। এদিকে বাঁকুড়ার সভাপতি পদ থেকে শুভাশিস বটব্যালকে সরিয়ে দেবার পিছনে প্রধান কারন মমতার ফোন না ধরার জন্য।এছাড়া জনসংযোগ একদম ছিল না । শুভাশিসের ব্যক্তিগত ইমেজ নিয়ে দলের অন্দরেই নানা প্রশ্ন উঠা শুরু হয়েছিল ।
ঝাড়গ্রামে বীরবাহা সোরেনকে নিয়ে দলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল ক্রমশ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল বলে খবর । ভাঙন ঠেকানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে শান্তিরাম মাহাতোকে সরিয়ে দেবার পিছনে মূলত বয়েসের কারণ ধরা হয়েছে । এছাড়া সাংগঠনিক কাজে পুরোপুরি ব্যর্থ শান্তিরাম মাহাতো। জেলার নেতাদের উপর তাঁর কন্ট্রোল ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছিল। হাওড়ায় গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে সরতে হল অরূপ রায়কে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের অর্পিতা ঘোষকে নিয়ে দলের ভিতরেই অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছিল । ভাঙন ধরছিল দলের নিচু স্তরে। ফলে দলের মধ্যেই গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছিলেন তিনি । তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিধানসভা ভোটের আগে ব্যাপক রদবদল কতখানি কাজে দেয় সেই রেজাল্ট পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২১ শের বিধানসভা ভোট পর্যন্ত ।