বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনা প্রধান এবং প্রধান মন্ত্রী পারভেজ মুশারফকে নিয়ে নয়া ফরমান জারি করল পাক আদালত । সেখানে পাকিস্তানের বিশেষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, “ফাঁসি দেওয়ার আগে যদি মুশারফের মৃত্যু হয়, তাহলে তাঁর দেহ নিয়ে এসে পার্লামেন্টের সামনে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে” । উল্লেখ্য বর্তমানে মুশারফ শারীরিক অসুস্থতার কারনে দুবাইতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।
প্রাক্তন পাক প্রধান মন্ত্রী এবং সেনা প্রধান পারভেজ মুশারফকে দেশদ্রোহী হিসাবে চিহ্নিত করেছে পাকিস্তান আদালত । গত মঙ্গলবার পাক আদালতের রায়ে মুশারফের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে । এরপর পাকিস্তানের বিশেষ আদালত জানিয়ে দিল, যদি অসুস্থ মুশারফ আদালতের সাজা ভোগ করার আগে মৃত্যু বরণ করেন, তাহলে তাঁর মৃতদেহ পার্লামেন্টের সামনে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে । চাঞ্চল্যকর এই নির্দেশে চমকে উঠেছে সারা পৃথিবী ।
পাকিস্তানের আদালতের এহেন নির্দেশ জারি করা এই প্রথম তা কিন্তু নয় । পূর্বেও এমন নজিরবিহীন নির্দেশ দিতে দেখা গেছে । অতীতে পাকিস্তানের এক সিরিয়াল কিলারের সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, সেই সাজা প্রাপ্ত সিরিয়াল কিলারকে মেরে তাঁর দেহ আক্রান্ত পরিবারের সামনে খণ্ড খণ্ড করে কাটতে হবে । অবশ্য পরবর্তীকালে আদালতের সেই নির্দেশ অনুসারে সাজাপ্রাপ্ত আসামীর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড হয়নি ।
পাকিস্তানের আইন বলা হয় অন্য দেশ থেকে আলাদা । দেশদ্রোহিতার জন্য পারভেজ মুশারফকে অভিযুক্ত করার পর আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে । কিন্তু সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল, পারভেজ মুশারফ নিজের আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য তাকে বা তাঁর আইনজীরকে কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি । একপ্রকার একতরফাভাবে সাজা ঘোষণা করা হল । পারভেজ মুশারফ এই সাজা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চাইছেন। তাঁরাই মামলা করেছিলেন।’’
সম্প্রতি পারভেজ মুশারফের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় সামনে এসেছে । সেখানে ১৬৭ পৃষ্ঠার রায় বেরিয়েছে । পাক আদালতের ওই রায়ে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত। দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। আইন প্রণয়নকারী সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিচ্ছি, পলাতক দোষী ব্যক্তিকে গ্রেফতারের জন্য সব রকম চেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু সাজা কার্যকরের আগেই যদি দোষীর মৃত্যু হয়, তা হলে ইসলামাবাদের ডি-চকে তার মৃতদেহ নিয়ে আসতে হবে। সেখানে তা তিন দিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে।’’ ডি-চক পাকিস্তান পার্লামেন্টের কাছেই অবস্থিত।