বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ভারতে মার্চ মাসে গোটা দেশে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয় । এরপর দীর্ঘদিন লকডাউনে কর্মহীন হয়ে থাকার পর, আনলক পর্যায়ে প্রায় সব কিছুই খুলে দেওয়া হয় । অধিকাংশ মানুষ জোয়ারের মত বেরিয়ে আসে বাড়ির বাইরে । দেখা যাচ্ছে কাজে বেরিয়ে আসা অধিকাংশ মানুষই এখন করোনার আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি ।
স্বাস্থ্য দপ্তরের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে, লকডাউন পর্যায়ে যেখানে বয়স্ক মানুষরাই বেশি করে করোনায় সংক্রামিত হয়েছিলেন, সেখানে আললক পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন কর্মক্ষম মানুষ । এর পিছনে একটাই যুক্তি কাজ করছে যে, আনলক পর্যায়ে যে সমস্ত কর্মক্ষম মানুষ কাজের জন্য বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন এই মুহূর্তে তাদের আক্রান্ত হবার সংখ্যাই বেশি । স্বাস্থ্য দপ্তরের এই পরিসংখ্যানই এখন সবচেয়ে বেশি চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ।
স্বাস্থ্য ভবন থেকে দাবী করা হয়েছে, আনলক পর্বে পুরুষদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে। সবকিছু খুলে যাওয়ার পর ১৮ হাজার ৫৪১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১৩ হাজার ১৬৫ জন(৭১%) পুরুষ। পাঁচ হাজার ৩৭৬ জন (২৯%) মহিলা। লকডাউনের পর ব্যবসা-বাণিজ্য, সংগঠিত-অসংগঠিত ক্ষেত্র, সরকারি-বেসরকারি অফিসে যাতায়াত বেড়েছে। ফলে পুরুষদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। তুলনামূলকভাবে মহিলা কর্মীরা রাস্তাঘাটে কম বেরিয়েছেন, সেই কারণে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম।
আবার বয়সের বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আক্রান্ত ১৮ হাজার ৫৪১ জনের বয়সের বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে ৬১ থেকে ৭৫ বছর পর্যন্ত বয়সের ১২.৯% মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ৭৫ বছরের উপরে ৩.২% মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ ১৬ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত কর্মক্ষমদের মধ্যে আক্রান্তের ভাগ ৮০.২%। আক্রান্ত হলেও মৃত্যুহার এখনও বেশি বয়স্কদের মধ্যেই।
এর অস্বাভাবিক সংক্রমণ বৃদ্ধির কারন হিসাবে স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সরকারি-বেসরকারি বাস চলতে শুরু করে। বাসে পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা সম্ভব হয়নি। অফিস কাছারিতেও যে সব মানা হয়নি তা এখন বোঝা যাচ্ছে। কারণ, নবান্ন, নবমহাকরণ, স্বাস্থ্য ভবন, জেশপ বিল্ডিং, প্রাণীসম্পদ ভবন সর্বত্র করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রী আবার ৫০% কর্মী নিয়ে অফিস চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন । সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে তাতে কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় ফের এক দফা লকডাউন করার ব্যাপারেও ঠিক এই কারনেই ফের লকডাউনের চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে ।