বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ভারত-চিন সংঘাতের মধ্যে ফের ইসরায়েল বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিল ভারতের দিকে । সীমান্ত সংঘাত নিয়ে চিনের সাথে ভারতের ক্রমাগত দ্বন্দ্বের মধ্যে প্রতিরক্ষা নিয়ে ইসরায়েলের সাথে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এর আলাপ আলোচনা চলছে, যা যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ ।
জানা গেছে, ভারতের সাথে চিনের সম্পর্কের অবনতি যত হচ্ছে, ইসরায়েলের সাথে বন্ধুত্ব ততই গভীর হচ্ছে । আগেই ইসরায়েলের প্রধান মন্ত্রী সরাসরি চিন প্রসঙ্গে ভারতের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছিলেন । এবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, ইজরায়েলের লেফট্যানেন্ট জেনারেল বেঞ্জামিন গান্তসের সঙ্গে টেলিফোনিক বার্তালাপ করেছেন।জানা গিয়েছে, প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে একাধিক পরিকল্পনা সহ সামরিক ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিস্তার ঘটানোকে কেন্দ্র করে দুই দেশের তরফে বিস্তারিত আলোচনা হয়ে গিয়েছে।
ভারতকে এই মুহূর্তে একসাথে তিন তিনটে প্রতিবেশীকে সামলাতে হচ্ছে । একদিকে লাদাখ সীমান্তে চিনের সাথে উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, অন্য দিকে পাকিস্তান কাশ্মীর সীমান্তে স্বাধীনতার পর থেকেই জ্বালিয়ে আসছে । সম্প্রতি চিনের মদত পেয়ে নেপালের কমিউনিস্ট সরকার কে পি শর্মা ভারতের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে । এই কারনেই ইসরায়েলের সাথে প্রতিরক্ষা বিষয়ে আলোচনা উঠে এসেছে ।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘পূর্ব লাদাখে ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সংঘাতের বিষয়টি আঞ্চলিক নিরাপত্তার আলোচনায় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে’। পাশাপাশি, ভারত-ইজরায়েল ফার্স্ট-ট্র্যাক মোডে অস্ত্রসস্ত্র আদানপ্রদানের বিষয়গুলিও আলোচনায় উঠে এসেছে। এছাড়াও ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে ইজরায়েলি কোম্পানির সঙ্গে ভারতের কাজ করার বিষয়েও কথা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছে।
ইজরায়েলি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের শক্তির কথা জানা আছে গোটা বিশ্বের । আমেরিকা পর্যন্ত ইসরায়েলের সামরিক শক্তিকে সমীহ করে চলে । ইজরায়েলি প্রযুক্তিতে তৈরি সশস্ত্র হেরন ড্রোন লাদাখ সীমান্তে নজরদারি চালাচ্ছে। পাশাপাশি, ইজরায়েলি স্পাইডার মিসাইলও রয়েছে ভারতী বাহিনীর হাতে। তবে সীমান্ত সংঘাতের এই পরিস্থিতিতে স্পাইডার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলের সঙ্গেই অন্যান্য প্রতিরক্ষার সরঞ্জাম ইজরায়েল পাঠাতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে ইজরায়েলি মাঝারি পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে। ইজরায়েলি অ্যারোস্পেসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই মিসাইলের প্রযুক্তিতে আধুনিকীকরণ করেছে ডিআরডিও। এই মিসাইল সিস্টেমে রয়েছে কম্যান্ড ও কন্ট্রোল সিস্টেম, ট্র্যাকিং রাডার, মিসাইল ও মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম। ৪.৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ২৭৬ কিলোগ্রাম ওজনের এই ক্ষেপণাস্ত্র যে কোনও যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, সশস্ত্র ড্রোনকে টার্গেট করতে পারে।
আরও একটি শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্ট সিস্টেম আছে ইজরায়েলের হাতে যার নাম ডেভিড’স স্লিং। ইজরায়েলের রাফায়ের অ্যাডভান্সড সিস্টেম ও আমেরিকার কোম্পানির যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে এই মিসাইল সিস্টেম। যুদ্ধবিমান, ট্র্যাকটিকাল ব্যালিস্টিক মিসাইল, মাঝারি থেকে দূর পাল্লার রকেটকে নিশানা করতে পারে এই মিসাইল সিস্টেম। এতে রয়েছে ৩টি রাডার, ইলেকট্রো-অপটিকাল ইনফ্রারেড সিকার, মাল্টি-সিকার সেন্সর। ৪-৭০ কিলোমিটার পাল্লার রকেট, অ্যারো মিসাইল ও ব্যালিস্টিক মিসাইলকে একসঙ্গে কাবু করতে পারে এই মিসাইল সিস্টেম।