বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ কথায় আছে “পুলিশে ছুলে আঠার ঘা”, কিন্তু কেউ যদি মন্ত্রীকে ছোঁয়, তা সে যে সে নয়, একেবারে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, তাহলে ? তাহলে সেটা তার ভবিষ্যৎ বরবাদ হবার পক্ষে যথেষ্ট । হ্যাঁ, ঠিক এরকম ঘটনা ঘটেছে বর্ধমানের বাসিন্দা রূপালি বল্লভের । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি এখন সরগরম । গত বৃহস্পতিবার যাদবপুরে হেনস্থা হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল । ঘটনার দিন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় প্রায় সাত ঘন্টা যাদবপুর কলেজের বিশ্ববিদ্যালয় অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন ।এরপর পশ্চিম বাংলার রাজ্যপাল নিজে গিয়ে তাকে বের করে আনেন ।
যাদবপুরের ঘটনার শত শত ছবি পোস্ট হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগেনি ।শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া নয়, সেই ছবির কিছু কিছু প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ মাধ্যমেও । সেই সমস্ত ছবির মধ্যে নিজের ছেলের ছবি খুঁজে পেয়েছেন বর্ধমান নিবাসী এবং ক্যান্সার আক্রান্ত রূপালী বল্লভ ।দেখা গিয়েছে রূপালিদেবীর ছেলে এবং যাদবপুরের ছাত্র দেবাঞ্জন বল্লভ বাবুলকে নিগ্রহ করছেন । মায়ের মন ! ছেলেকে ওই ঘটনার সাথে যুক্ত থাকতে দেখে চিন্তায় ঘুম উড়ে যায় । তিনি বাড়িতে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন, বাবুল সুপ্রিয়কে নিগ্রহ করার পরিণতি কী হতে পারে ?
ছেলের হয়ে রূপালিদেবী সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করেই বাবুলের কাছে ক্ষমা চান । আবেদন করেন, “ওকে ক্ষমা করে দিন।” সেই পোস্ট বাবুল সুপ্রিয়ের নজরে আসা মাত্র, শনিবার টুইট করে লিখলেন, “আপনি চিন্তা করবেন না মাসিমা। আমি কোনও ক্ষতি করব না আপনার ছেলের। ওর ভুল থেকে ও শিক্ষা নিক, এটাই চাই।” একই সঙ্গে আসানসোলের সাংসদ লিখেছেন, “আমি নিজে তো এফআইআর করিইনি। কাউকে করতেও দিইনি। আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না মাসিমা। তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন।”এ বিষয়ে দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, দেবাঞ্জনের বক্তব্য ছিল, তারা এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল । কিন্তু মন্ত্রী উস্কানি দিয়েছেন । তারপর যে ঘটনা ওই দিকে মোড় নেবে, তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারেনি।
দেবাঞ্জনের বাবা রূপালী দেবী অনেক দিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত । দেবাঞ্জনের বাবা চন্দন বল্লভ বর্ধমানের একটি স্কুলের বাণিজ্য বিভাগে শিক্ষকতা করেন । তিনিও ভাবতে পারেননি, সংবাদমাধ্যমে ছেলের এমন মারমুখী ছবি দেখতে হবে। তবু উৎকণ্ঠায় থাকা পরিবার আর ক্যানসার আক্রান্ত মা-কে আশ্বাস দিয়ে বাবুল অন্য বার্তা দিতে চাইলেন বলেই মনে করছেন অনেকে। অবশ্য বাবুল সুপ্রিয় এক জন অসুস্থ মা-কে যেভাবে এই আশ্বাস বানী দিলেন, তাতে তাঁর ভাবমূর্তি আরও ভাল হল । এছাড়া তিনি হয়ত বোঝাতে পেরেছেন যে, তিনি হিংসার রাজনীতি পছন্দ করেন না ।