বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ সারা দেশ জুড়ে চলছে অলিখিত কারফিউ । ঘর থেকে অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বের হবার নিয়ম নেই । রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনী টহল দিচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য । পর্যাপ্ত কারন না দেখালে হয় কান ধরে উঠবস, না হলে পুলিশের প্যাঁদানি অথবা সোজা শ্রী ঘরে । এরই মধ্যে রাজ্যের করোনা আশঙ্কার মধ্যে বেশ স্বস্তির খবর যে, আজ নতুন করে কোন করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া যায় নি ।
জানা গেছে গত চব্বিশ ঘণ্টায় এই রাজ্য থেকে মোট ৬৬ টি নমুনা পাঠানো হয়েছিল । স্বাস্থ্যভবন থেকে জানানো হয়েছে, এই ৬৬ টি নমুনার রিপোর্ট হাতে এসেছে এবং সব কয়টি রিপোর্ট নেগেটিভ । ফলে আতঙ্কের মধ্যেও বেশ কিছুটা স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে । বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এখন ভারতে স্টেজ-২ পর্যায়ে রয়েছে করোনা পরিস্থিতি । সকল দিক থেকে লড়াই চালানো হচ্ছে করোনা সংক্রমণ যেন কিছুতেই স্টেজ-৩ তে না পৌঁছায় । কারন স্টেজ-৩ তে পৌঁছানো মানেই ভারতের মত জনবহুল দেশে করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে ।
বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমেছেন করোনা মোকাবিলা করার জন্য । রাজ্যের এই চরম দুর্যোগে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টা অন্যান্য রাজ্যের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায়ের এই লড়াইকে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ।
বর্তমানে গোটা রাজ্যে এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ২১৭ জন বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে ।আজ বুধবার স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাসকে বিশ্বজুড়ে মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতা ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে মোট ৮১ হাজার ০৯৩ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে রাজ্যের সাতটি বর্ডার চেকপোস্টে ৫ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮০৮ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এছাড়াও তিনটি বন্দরে ৫৩৪১ জন ক্রু-কেও স্ক্রিনিং করে দেখা হয়েছে।এদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে আসা ২৭ হাজার ১০৭ জনকে চিহ্নিত করে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৮১৮ জনের নজরদারির সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে এবং ২১৭ জন আইসোলেশনে রয়েছেন। বাকি ২৫ হাজার ০৭২ জনকে এখনও বাড়িতে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই বিশাল সংখ্যার মধ্যে এই পর্যন্ত মোট ২৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে ২৩৩ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অবশ্য বর্তমানে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু ধরা পড়েছে। তবে আরও দু’জনের রিপোর্ট আসা এখনও বাকি আছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধ কালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে করোনা মোকাবিলায় যে কোন ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য । বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতাল ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ১০৮৯টি বেড তৈরি করা হয়েছে। এই সমস্ত কিছুর মধ্যে গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে কোন পজিটিভ রিপোর্ট না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে রাজ্য সরকার এবং জনগণ ।