বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ বাংলা সিনেমার জগতের এক যুগের অবসান ঘটিয়ে চলে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা তাপস পাল। তিন দশক ধরে বাংলা সিনেমার জগতে সমান জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে তিনি নিজের জায়গা বজায় রেখেছিলেন। শুধু জনপ্রিয় নায়ক নন একজন দক্ষ অভিনেতা হিসেবে বরাবরই তাপস পাল নিজেকে প্রমাণ করে এসেছেন।
বাংলার সিনেমা জগতের এই দিকপাল মঙ্গলবার ভোরবেলা মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ত্যাগ করেন তাঁর শেষ নিঃশ্বাস। তাপস পালের জন্ম হয় ১৯৫৮ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর। মৃত্যুর সময় তাপস পালের বসয় হয়েছিল ৬১ বছর। তাপস পালের জীবন দেখতে গেলে অনেকগুলো ভাগ আছে। একাধারে তিনি দক্ষ অভিনেতা, অন্যদিকে আদ্যন্ত একজন পরিবার পাগল মানুষ এবং অন্যদিকে তিনি একজন তৃণমূলের খুবই জনপ্রিয় একজন সাংসদ।
অভিনয় জীবন তাঁর শুরু হয় ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া তরুণ মজুমদারের সিনেমা “দাদার কীর্তির” হাত ধরে। তখন তাপস পালের বসয় মাত্র ২২ বছর। কিন্তু অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং ঝোঁক সেই ছোটবেলা থেকে। দাদার কীর্তি ছিল সেই সময়ের একটি অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা।
তারপর আর তাপস পালকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক হিট সিনেমা তিনি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। “গুরুদক্ষিণা”, “ভালোবাসা ভালোবাসা” র মতো হিট সিনেমা তিনি উপহার দিয়েছেন। জুটি বেঁধেছিলেন বাংলার সব প্রথম সারির নায়িকাদের সাথে। পাশাপাশি যাত্রা মঞ্চও কাঁপিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। ১৯৮১ সালে তিনি “ফিল্মফেয়ার” পুরস্কারও পান। শুধু বাংলা নয় হিন্দি সিনেমার জগতেও তিনি পা রাখেন মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে “অবোধ” ছবিতে। তবে বাংলার মতো হিন্দি সিনেমার জগতে তাপস পাল খ্যাতি পাননি।
কিন্তু তাপস পালের জীবনে সবচেয়ে খারাপ দিন আসে ২০০৯ সালের তৃণমূল কংগ্রেস থেকে জিতে কৃষ্ণনগরের সাংসদ হবার পরই। ২০১৬ সালে বাংলার সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি অর্থাৎ রোজ ভ্যালী চিটফান্ড কাণ্ডে জড়িয়ে যায় তাপস পালের নাম। ফলে অনেক দিন অবধি তাঁর হাজত বাসও হয়। তারপর থেকেই তিনি কার্যত গুটিয়ে নেন নিজেকে।
অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তাপস পাল। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর কারণ এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। মৃত্যু কালে তিনি রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী একজন অতিপরিচিত শিল্পী নন্দিনী পাল এবং তাঁর একমাত্র কন্যা যিনিও একজন অভিনেত্রী সোহিনী পালকে। যদিও এখনও তাপস পালের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে তাপস পালের মৃত্যুতে যে সাধারণ মানুষ থেকে বাংলার সিনেমা জগত খুবই মর্মাহত তা বলাই বাহুল্য।