নিজের শিল্পীস্বত্বা নিয়ে সমাজে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হওয়ার পরও অর্থের অভাবে এবং পরিস্থিতির শিকারে শেষে কিনা করতে হচ্ছে সিকিউরিটি গার্ড এর কাজ। এমনটা আমরা কখনও কখনও সিনেমার পর্দায় দেখতে পায়, তবে বাস্তবেও যে এমনটা হওয়া সম্ভব তা কেউ ভাবতেই পারিনা। সমাজের বুদ্ধিজীবী মানুষদেরকে অবাক করে দিয়ে এমনটাই ঘটল ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ এর সুব্রত রঞ্জন দত্ত এর সাথে।

ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ তে শিক্ষানবীশ হিসাবেই চলচ্চিত্র জগতে মূলত তাঁর পদার্পণ। এরপর আশির দশকে পরপর বহু ছবিতে সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিগত ২০১৬ সালে মুক্তি পায় তাঁর নির্মিত ছবি ‘প্রবাহিণী’। তার ঠিক পর তিনি শিশি-বোতল কুড়ানো মেয়েদের জীবন নিয়ে ‘কলি’ নামক একটি ছবি নির্মাণ করেছেন, যদিও সেটি এখনো মুক্তি পায়নি।

তবে এতকিছুর পরও বাস্তব সমাজের কঠোরতার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। চলচ্চিত্র নির্মাতার নিজের জীবনই এখন ছবির চরিত্রের সাথে মিলে যাচ্ছে। পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে ৬২ বছর বয়সে দারোয়ানের কাজ করছেন পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দত্ত।

ভিআইপি রোডস্থিত একটি আবাসনে ১২ ঘণ্টার সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করে দিন যাপন করছেন তিনি। সারা রাত ধকলের পরও নতুন কাজের আশায় সকালে ছোটেন টালিপাড়ায়। সেখান থেকে ফিরে আবারও আবাসনের গেটের সামনে রাত পাহারা দিতে হয় তাঁকে।

তাঁর কথায়, “স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে সংসার। চলতে হবে তো। কয়েক বছর বসে রয়েছি। শেষে এ কাজেই ঢুকে গেলাম। কোনো কাজই ছোট নয়।”

এপ্রসঙ্গে ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল দে বললেন, “এটা দুর্ভাগ্যের। সুব্রত টালিগঞ্জের পরিচিত মুখ। এখন যাদের হাতে ক্ষমতা, তাদের দলের লোকজনই শুধু কাজ পায়। সুব্রতবাবুর মতো অভিজ্ঞ মানুষেরা কাজ পান না। এতে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির দৈন্যদশায় ফুটে উঠছে।”

তবে হাল ছাড়েননি সুব্রত। তিনি বললেন “জীবন সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই গতিশীল। ভালো কাজের সুযোগ নিশ্চয়ই পাবো। চেষ্টা চালাতেই হবে।”

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply