এইতো কিছুদিন হলো তার দুইজন প্রিয় বন্ধু এবং অভিনেতা সমিত ভঞ্জ এবং চিনময় রায় চলে গেছিলেন সবাইকে ছেড়ে । গতকাল চলে গেলেন স্বরূপ দত্ত । নিজের বাড়িতে বাথরুমে পড়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য দিন কয়েক আগে স্বরূপ দত্ত ভর্তি হন হাসপাতালে । উল্লেখ্য স্বরূপ দত্তের বয়স হয়েছিল 78 বছর । দুখের সাগরে ভাসিয়ে রেখে গেলেন অগুনতি ভক্ত, স্ত্রী ও পুত্র দত্তকে ।
বুধবার এই বিশিষ্ট অভিনেতার মৃতদেহ যখন বালিগঞ্জের বাসভবনে আনা হয়, তখন প্রতিবেশী, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে টলিউডের বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির আক্ষেপ লেগেই ছিল – এমন অভিনেতা এবং এমন নেতা আর কোথাও পাওয়া যাবে না । কাস্তে- হাতুড়ি – তারা’ য় লাল পতাকায় মোড়া ছিল উৎপল দত্তের এই বিখ্যাত ছাত্রের দেহ ।
টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মরদেহের পাশে বসে পরিচালক গৌতম ঘোষের গলায় ঝরে পরলো স্মৃতির কিছু টুকরো । কোন একটা পার্ক সাধারণ মানুষের হাতের বাইরে যাতে না বেরিয়ে যায় তাঁর জন্য স্বরূপ দত্ত আন্দোলন শুরু করেছিলেন । তিনি সেই পার্কটিকে প্রোমোটার এর হাত থেকে বাঁচান । সেন্ট জেভিয়ার্স এর অর্থনীতির ছাত্র স্বরূপ তখন শরীর খারাপ নিয়েও প্রোমোটারের বিরুদ্ধে গিয়ে সেই পার্ক সাধারণ মানুষের জন্য রক্ষা করেন।
স্বরূপ দত্তের বেশ কিছু বিখ্যাত ছবি রয়েছে । তার প্রথম ছবি ছিল তপন সিংহ পরিচালিত আপনজন । এছাড়াও তার অভিনীত সাগিনা মাহাতো, হারমোনিয়াম, অচেনা অতিথি প্রভৃতি বিখ্যাত ছবিতে নিজের স্বকীয় ভূমিকায় অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এবং অগুনতি ভক্তদের অকুণ্ঠ প্রশংসা লাভ করেছেন ।
ছেলে সারন বলছিলেন, “নিজে যেটা সত্যি মনে করতেন, সেটা বলতেন সাহসের । সঙ্গে কোনরকম আপস করা বা বিশেষ কোনো সুবিধা পাওয়ার জন্য কোন লবির অংশ হওয়া কল্পনার অতীত ছিল তাঁর কাছে । সে কারণে অনেক মূল্য চোকাতে হয়েছে সারা জীবন ।
উল্লেখ্য এই পাড়াতেই থাকতেন আর একজন বিশিষ্ট অভিনেত্রী রুমা গুহ ঠাকুরতা । তিনি অনেক আগে বালিগঞ্জ থেকে মহাপ্রয়াণের পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন আজ বালিগঞ্জ স্বরূপ দত্তের মতো একজন উজ্জ্বল সন্তানকে হারিয়ে আবার যেন ম্লান হয়ে গেল ।