বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ সংবাদপত্রে CESC অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে । কিন্তু সেই ব্যাখ্যায় কিছুই স্পষ্ট করে বলা হয়নি এমটাই দাবী সাধারন মানুষের । খোদ বিদ্যুৎ মন্ত্রী পর্যন্ত জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপন দেখে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না । ফলে মানুষের মধ্যে অসন্তোষের দানা আরও বাড়তে শুরু করেছে ।
বিদ্যুৎ মন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর CESC সংবাদপত্রে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে রাজি হয় । বিজ্ঞাপনে সিইএসসি-র যুক্তি, লকডাউনের সময়ে তৈরি প্রভিশনাল বিল অনেক কম ছিল। ফলে অধিকাংশ গ্রাহকেরই বিদ্যুত্ খরচের কিছুটা অনাদায়ী থেকে যায়। মিটার রিডিং নিয়ে মোট বিদ্যুত্ খরচের সঙ্গে এ বার তা যোগ হয়েছে। মোট ইউনিট লকডাউনের মাসগুলি দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। ফলে অঙ্কের হিসেবে প্রতি মাসে ইউনিট খরচ বেরিয়েছে। এর পর বিভিন্ন মাসুলের যে স্ল্যাব হয় (যেমন, ০-২৫ ইউনিট পর্যন্ত মাসুল প্রতি ইউনিট ৪.৮৯ টাকা), সেই দাম ধরেই-ধরেই প্রতি মাসের হিসেব করে চূড়ান্ত বিল তৈরি হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে প্রভিশনাল বিলের দাম মেটানো ইউনিট।
এদিকে মানুষের ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে মানুষের রাস্তায় নামার হুমকি, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারে । রাজ্যের নির্দেশে সিইএসসি তড়িঘড়ি সংবাদপত্রে বিল নিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেটা দেখে খোদ বিদ্যুত্মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। গ্রাহকের বিল এত চড়া হল কেন, সেই হিসেবের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। দেয়নি ওরা।’‘ আর ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রাহকদের প্রশ্ন, বরাবর যত টাকার বিল হয়, এ বার তার অঙ্ক পাঁচ-ছ’গুণ হওয়ার যুক্তি কোথায়? এটা কি তা হলে লকডাউনে হারানো ব্যবসা উসুলের জন্য সাধারণ মানুষকে লুটের ফন্দি?
রাজ্যের বিদ্যুত্ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুত্ চৌধুরী জানান, কাল, সোমবার তাঁরা সিইএসসি-র সদর দফতর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন। সোমবার সংস্থাকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডেও। আর শোভনদেববাবুর দাবি, ”এর সমাধান করেই ছাড়ব।”
১৯৯৯০ টাকা বিল পেয়ে তোপ দেগেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ”সাধারণ জীবনযাপন করি। বিশেষত এ রকম অনিশ্চিত সময়ে খরচ সামলে চলছি। তা-ও এমন বিল ! বিকল্প নেই। অসহায় ! আগের বিল ছিল ১৬ হাজার।” সিইএসসির অবশ্য দাবি, হিসেবে ভুল নেই। সংস্থার এমডি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এক ভিডিয়োবার্তায় জানিয়েছেন, গ্রাহকেরা এখন বিলের ৫০% দিয়ে, পরের দু’মাসে ২৫% করে দিতে পারবেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিত্ ঘোষও বলেন, গ্রাহকদের প্রতি তাঁরা দায়বদ্ধ। সব স্ল্যাবের সুবিধা দিয়েই বিল হচ্ছে।
এদিকে সাধনবাবুর তোপ, ”রাজ্যে সিইএসসি একতরফা ব্যবসা করছে। এটা চলতে পারে না।” কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান বলেন, ”একেই চূড়ান্ত দুর্ভোগের মধ্যে আছেন সকলে। তার উপরে এমন অন্যায় বিলের বোঝা। এটা ফেরাতে হবে।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ”ভুতুড়ে বিল আসছে। মানুষকে লুট করতে দেওয়া যাবে না। আন্দোলনের মুখোমুখি হতে হবে সরকার ও সিইএসসি-কে।” সব ঠিক আছে, কিন্তু তিমিরে থেকে যাচ্ছে সাধারন মানুষ । কারন এ সব হিসেব তো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। সহজ করে বোঝানোর কোনও প্রক্রিয়া নেই? নাকি সেটা সিইএসসি নিজেই জানে না ? এটাই তাদের প্রশ্ন ।