বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ টাকা এমনই জিনিস যা মানুষের হাতে হাতে ঘুরে বেড়ায় । আর দেশের করোনা পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে, তাতে সাধারন মানুষের আতঙ্কিত না হবার কোন কারন নেই । ফলে নিজেকে ত বটেই সাথে টাকাকেও জীবাণুমুক্ত করেছে এক শ্রেণীর মানুষ । ফলস্বরূপ করোনাকালে মানুষের স্বাস্থ্য ও আর্থিক পরিস্থিতি যতটা খারাপ হয়েছে, ততটাই খারাপ অবস্থা কারেন্সি নোটেরও। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে করোনার মধ্যেই টাকা স্যানিটাইজ এবং বারবার জল দিয়ে ধুয়ে ব্যবহার করায় ১৭ কোটির নোট বাতিল করতে হয়েছে, যা একটা রেকর্ড ।
রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়েছে প্রতি বছরের তুলনায় এই বছর প্রায় ১৭ কোটি নোট বাতিল করতে হয়েছে, যা কিনা অন্যান্য বছরের তুলনায় বহুগুন বেশী । করোনা সংক্রমণের হাত থেকে নিজেকে এবং পকেটের টাকাকে বাঁচাতে অনেকেই নোটগুলিকেও স্যানিটাইজ করে, ধুয়ে এবং কয়েক ঘন্টা ধরে রোদে শুকিয়েছে। এই কারণেই ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কে (আরবিআই) পৌঁছানো খারাপ নোটের সংখ্যা এখন পর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড করে ফেলেছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই ১৭ কোটি বাতিল নোট নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে জানা গেছে, চলতি বছরে যে সংখ্যায় দুই হাজারের নোট খারাপ হয়েছে, তাঁর মূল্য ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই সংখ্যাটা গত বছরের তুলনায় ৩০০ গুণ বেশি। নষ্ট হওয়া নোটের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে ২০০ টাকার নোট। আর তৃতীয় স্থানে ৫০০ টাকার নোট। গত বছরের তুলনায় এই সমস্ত নোটের সংখ্যাও বেড়েছে।
মার্চ মাস থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয় । কেন্দ্রীয় সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা করে । করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি মানুষের মনে আতঙ্কও সমানভাবে সংক্রামিত হয় । টাকা বিভিন্ন হাত ঘুরে আসে বলে সেখানে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে এই ধারনা অনেকের মনেই বদ্ধমুল হয়ে দাঁড়ায় । ফলে টাকার নোট হাতে নেবার সময় স্যানিটাইজ করা হয় ।
অনেকে আবার স্যানিটাইজ করে সন্তুষ্ট হতে পারেননি, তারা নোটগুলি রীতিমত ভালভাবে জলে ধুয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে শুখিয়েছে । এমনকি ব্যাঙ্কগুলিতেও নোটের বান্ডিলে স্যানিটাইজার স্প্রে করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর ফলস্বরূপ, পুরানো নোটের অবস্থা তো খারাপ হচ্ছেই, নতুন নোটের আয়ুও এক বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ২০০০ টাকার নোট ছাপানো বন্ধ রেখেছে আরবিআই। পরিসংখ্যান বলছে গত বছরে ৬ লাখ ২ হাজার টাকার নোট বদলানো হয়েছে আরবিআই থেকে। এবছর সেই সংখ্যাটা ১৭ কোটিরও বেশি। এছাড়া ২০ টাকার নতুন নোট একবছরের মধ্যে ২০ গুণ খারাপ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ২০০ টাকার নোট খারাপ হয়েছে ৩০০ গুণ বেশি।আর গত বছরের তুলনায় ৫০০ টাকার নোট খারাপ হয়েছে ১০ গুণ বেশি।