সংগৃহীত ছবি


সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন ইয়া রশিদ, ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও রাষ্ট্রপতির (এপিএস) সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক মামুনের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে তা অবশেষে প্রকাশ্যে এসেছে সানজিদা আফরিন। তিনি বলেন, ‘হারুন (হারুন অর রশিদ) স্যারকে আমার স্বামীই প্রথম হত্যা করেছিল।’

সানজিদা আফরিন আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তিনি ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ বিভাগে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতাল থেকে। এডিসি সানজিদা আফরিনের সঙ্গে ছিলেন এডিসি হারুন-ইয়া-রশিদ।

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন ধরেই হার্টের সমস্যায় ভুগছিলাম। 2019 সাল থেকে আমি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন করছি।

চার-পাঁচ মাস ধরে সমস্যা বেড়েছে। শনিবার ব্যাথা বাড়ে, আমি ডাক্তার দেখাতে চাই কারণ সেদিন আমার অবসর সময় আছে। আমি যে ডাক্তারকে দেখি সে দেশের বাইরে এবং আমি ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের এডিসি হারুন স্যারকে একটি সিরিয়াল পরিচালনা করতে বলি। ওসির মাধ্যমে সিরিয়াল পরিচালনা করেন।
তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে গিয়ে দেখি, যে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়েছে তিনি কনফারেন্সে আছেন।

হারুন স্যারকে সব খুলে বললে কাছাকাছি হওয়ায় তিনি হাসপাতালে আসেন। তিনি এসে একজন ডাক্তারকে নিয়ে গেলেন। দেখানোর পর অনেক পরীক্ষা দিলেন।

সানজিদা দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি ইটিটি রুমে ছিলেন। তিনি বলেন, “ঘটনার সময় আমি যে কক্ষে ইটিটি করা হয়েছিল সেখানে ছিলাম। টিটি করার 15-20 মিনিট পর, আমি বাইরে একটা হৈচৈ শুনতে পেলাম। প্রথম যে আওয়াজটা কানে আসে তা হলো স্যারের (এডিসি হারুন) চিৎকার- ‘ভাই, আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? তুমি আমার গায়ে হাত তুলতে পারবে না।”

তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কেউ হয়তো সমস্যাটা করেছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আমার স্বামীকে (আজিজুল হক মামুন) দেখলাম, তিনি সেখানে ঠিক কী করছেন, কেন তিনি গেছেন, আমি জানি না। মনে হচ্ছিল যেন সে একেবারে পাগল হয়ে গেছে এবং খুব উত্তেজিত। তার সাথে আরও কিছু লোক ছিল, আমি তাদের সত্যিই চিনি না। স্যারকে (এডিসি হারুন) ইটিটি রুমে নিয়ে এসে মারধর করা হয়।

‘তারা মূলত স্যারকে (এডিসি হারুন) টেনে নিয়েছিল এই ঘরে। সানজিদা বলল, “স্যার ওদের এড়াতে ইটিটি রুমের এক কোণে দাঁড়িয়েছিলেন।”

সানজিদা বলেন, “তখন আমার স্বামী তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, ‘এই ভিডিওটা বানান।’ তারপর সবাই ফোন বের করে ভিডিও বানাতে লাগলো। তিনি যখন ভিডিও শুরু করেন, তখন আমি আমার স্বামী ও তার সঙ্গে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তারপর যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আমার হাতেও একটু ব্যথা হয়। কারণ আমি চাইনি ওই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। এবং আমি আমার স্বামীর সাথে থাকা ছেলেদের কাউকেই চিনতাম না।”

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-ইয়া-রশিদ দাবি করেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাময়িক বরখাস্ত অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন-ইয়া-রশিদ প্রথম রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন হামলার শিকার হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কমপ্লেক্সে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান এ তথ্য জানান।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে পুলিশ।

এ ঘটনার পর বিতর্কিত অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন-ইয়া-রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডিএমপি। কমিটিকে তদন্ত করে দুই দিনের মধ্যে ডিএমপি কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.