সংগৃহীত ছবি


রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দেখানো পথেই আমরা অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাব। দেশ সব ষড়যন্ত্রের বিরোধিতা করে যাবে। আমি সেই মিছিলে যোগ দেব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা সংগ্রাম করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাবরণ, নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করে সংগ্রাম করেছেন। স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনাকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেন।

এই উদ্দেশ্যে, তিনি আমাদের স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা সংবিধান উপহার দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী খুনিদের ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির পিতাকে হারিয়েছি। এটা ছিল জাতি হিসেবে আমাদের চরম ব্যর্থতা। কারণ আমরা তাকে ধরতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে না থাকলেও তার নীতি ও আদর্শ বাঙালিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায় ও অনুপ্রাণিত করে।

তিনি বলেন, নৌকাবাইচ বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির এক অনন্য ঐতিহ্য। বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির বহু মূল্যবান উপাদান। এই লোকসংস্কৃতিগুলোকে সঠিকভাবে লালন-পালন করা গেলে তারা হয়ে উঠতে পারে বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অমূল্য ভান্ডার। পাবনা জেলা বাঙালির লোকসংস্কৃতির একটি উর্বর এলাকা। নৌকাবাইচ আমাদের অঞ্চলের এমনই একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। কিন্তু সেসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ যথাসময়ে শেষ হয়েছে। মানুষ এর সুফল পেতে শুরু করেছে।

পাবনার সভাপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সারাদেশের উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে পাবনার উন্নয়নে নতুন গতি এসেছে। ২০০৮ সালে পাবনায় মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হলেও তখন পর্যন্ত কোনো হাসপাতাল ছিল না। পাবনায় ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে আজ সকালে। চলতি মাসে পাবনা-ঢাকা রেল সার্ভিস চালু হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে শিগগিরই তা শুরু হবে। এ ছাড়া ইছামতি নদী পুনর্বাসন ও পুনঃড্রেজিংয়ের একটি প্রকল্পও চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ, সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা থাকলেই উন্নয়ন ফলপ্রসূ হয়। তাই পাবনার উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ও সাঁথিয়ার মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু প্রমুখ।

এ সময় রাষ্ট্রপতির স্ত্রী প্রথম নারী অধ্যাপক ড. পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা সুলতানা। নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনার জেলা প্রশাসক মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, জেলা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আসম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, বড় পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন, সাঁথিয়ার ইউএনও মাসুদ হোসেন প্রমুখ।

পরে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে পাবনার সাঁথিয়ায় ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচ উপভোগ করেন সাহাবুদ্দিন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় পাবনা মেডিকেল কলেজের ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

বুধবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে পাবনা শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। রাত ৯টার দিকে পাবনা থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে সার্কিট হাউসে রাত কাটান তিনি।

রাষ্ট্রপতি বৃহস্পতিবার সাঁথিয়া পালতোলা অনুষ্ঠান শেষে পাবনা শহরের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন করবেন। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে পাবনা সার্কিট হাউসে গার্ড অব অনার শেষে পাবনা স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডে পৌঁছে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হবেন।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply