লিবিয়ায় মানবপাচার ও চাঁদাবাজি চক্রের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন বাদশা মিয়া (৪২) ও আরজু বেগম (৩১)।
বুধবার (২৬ জুন) কক্সবাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। শুক্রবার (২৮ জুন) সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রেহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মানব পাচারকারী চক্র অসহায়দের উন্নত জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে নিয়ে যেত এবং প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায় এবং পরে লিবিয়ায় আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমকে আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অন্য একটি চক্রের হাতে তুলে দেয়। এই চক্রটি ইমু থেকে নিহতদের পরিবারকে ফোন করে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করত। মুক্তিপণ পরিশোধের পর, ক্ষতিগ্রস্তদের বিপজ্জনকভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠানো হয়। প্রক্রিয়ায় অনেক শিকার সমুদ্রে মারা গিয়েছিল, কিছুকে উদ্ধার করা হয়েছিল এবং অল্প সংখ্যক ইউরোপে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী মো. গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া গিয়েছিলেন নাসির হোসেন। সেখানে তিনি লিবিয়ার অভিবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে টাইলসের কাজ করেন। চার মাস আগে নাশির লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে মানব পাচারকারীদের হাতে ধরা পড়ে। নির্যাতিতার পরিবারকে 15 লাখ টাকার মুক্তিপণ কল করা হয়েছিল। চক্রটি ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন উন্নয়ন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করত।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, বাদশা মিয়া তার ব্যবসায়িক নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে ব্যবহার করতে দেন। ওই অ্যাকাউন্টে মোট 12 লাখ 50 হাজার 910 টাকা জমা হয়েছে এবং 10 লাখ 97 হাজার 285 টাকা তোলা হয়েছে। কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার আবিদ স্টোর নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাদশা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার প্রতিবেশী চাচাতো বোন আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিম লিবিয়ায় মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। আরজু বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত বাদশা মিয়া ও আরজু বেগম আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন।