রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে তিন দফা প্রস্তাব পেশ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেন।
সংকট মোকাবেলায় এক রাউন্ডের আলোচনায়, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অফ স্টেট উজরা জেয়া ঘোষণা করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা, বাসস্থান এবং আশ্রয়ের জন্য প্রায় 200 মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে।
এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব নেতাদের আবারও আহ্বান জানিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক সমাধানসহ তিনটি প্রস্তাব দেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে শিগগিরই বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্মেলন করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে এই সংকট একটি নতুন সৃজনশীল এবং কার্যকর উপায়ে সমাধান করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় চলমান জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) ত্বরান্বিত করতে হবে। জেআরপির জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল বাড়াতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বাড়াতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলমান মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।
সাইড লাইনে বৈঠক ছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিন খুব ব্যস্ত ছিলেন ড. ইউনুস। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ অনেক দেশ ও সংস্থার নেতাদের সঙ্গেও দেখা করেছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সংগঠন ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভও এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়কারী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ডক্টর ইউনূস বিশ্ব নেতাদের কাছে ব্যাপক ছাত্র বিদ্রোহের বর্ণনা দিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি তিনজন সমন্বয়কের একজনকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচয় করিয়ে দেন।
এদিকে, জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরাও অংশ নেন। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকাও তুলে ধরেন ড. ইউনুস। তিনি বলেন, বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সবসময় কাজ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ দিনের সফরে তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। মুহাম্মদ ইউনূস।