চলতি বর্ষা মৌসুমে আষাঢ়ের শুরুতে দেশে বৃষ্টিপাত কমলেও মাঝামাঝি বেড়ে যায়। এরপর কয়েকদিন আবার কমে যায়। তবে সারাদেশে সক্রিয় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর কারণে গত দুই দিনে আবার বৃষ্টিপাত বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে।
টানা ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ছুটির দিনেও রাজধানীবাসীকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ শনিবার থেকে আগামী কয়েকদিন সারাদেশে বৃষ্টিপাত ধীরে ধীরে কমতে পারে। এ সময় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় উত্তরাঞ্চলে বেশি বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে এই চার বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া আজ ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে গতকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে ঢাকায় একদিনে এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। টানা টানা বর্ষণে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ভারী বৃষ্টিপাত মূলত সক্রিয় বর্ষা এবং সমুদ্র থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্পের কারণে হয়। মূলত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়।
বর্ষা যত শক্তিশালী বা সক্রিয় হবে, তত বেশি বৃষ্টিপাত হবে। কয়েকদিন ধরে সারাদেশে মৌসুমী বায়ু ‘মাঝারিভাবে সক্রিয়’ থাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম ছিল। যাইহোক, গত বৃহস্পতিবার এটি আবার শক্তিশালী হয়েছে কারণ এটি ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছে, যার ফলে সারা দেশে বৃষ্টিপাত বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের জলবায়ু গবেষক ও আবহাওয়াবিদ ড. বজলুর রশিদ গতকাল বলেন, “মূলত সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। বর্ষাকালে এমন বৃষ্টিপাত হওয়া মোটেও অস্বাভাবিক নয়। আগামীকাল (আজ) থেকে সারাদেশে বৃষ্টি কমতে পারে। তবে এখন বর্ষা মৌসুম হওয়ায় বৃষ্টি থামবে না কিছুতেই। বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ু সারাদেশে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে শক্তিশালী। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত।
দেশের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে কক্সবাজারে গত দুই দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জেলায় ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে।