এই বিপর্যয়টি ভারতের বিহারে আঘাত হানে, যার কেন্দ্রস্থল ছিল ‘জিতিয়া’ বা ‘জীবিতপুত্রিকা’ উৎসব। মায়েরা তাদের সন্তানদের সুস্থতার জন্য যে রোজা রাখেন তা পালন করতে গিয়ে অন্তত ৩৭টি শিশু মারা যায়। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বিহারের বিভিন্ন স্থানে পৃথক ঘটনায় ৩৭ শিশুসহ মোট ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ৭ জন নারীও রয়েছেন। পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারন, ঔরঙ্গাবাদ, কাইমুর, বক্সার, সিওয়ান, রোহতাস, সরণ, পাটনা, বৈশালী, মুজাফফরপুর, সস্তাপুর, গোপালগঞ্জ, আরওয়াল- এই জেলাগুলি কাঁদছে।

এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি সহায়তা দেওয়া হবে।

বিহারের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত ৪৩টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা এক্স-গ্রেশিয়া দেওয়া হবে। এই টাকা দেওয়া হয়েছে ৮ জনকে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এখনও নিখোঁজদের মৃতদেহ অনুসন্ধান ও উদ্ধারে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে।

এটি লক্ষণীয় যে ভারতে মায়েরা তাদের সন্তানদের মঙ্গল ও সমৃদ্ধির জন্য এই ‘জিতিয়া’ বা ‘জীবীপুত্রিকা’ উপবাস পালন করেন। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমী থেকে নবমী তিথির মধ্যে তিন দিনব্যাপী এই উৎসব পালিত হয়। মায়েরা তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার জন্য রোজা পালন করেন। এই দিনে মায়েরা তাদের সন্তানদের নিয়ে বিহারের বিভিন্ন জলাশয়ে স্নান করতে যেতেন। কিন্তু ভারী বর্ষণের কারণে বিহারের প্রায় সব নদীতেই এখন প্রবল জলপ্রবাহ। সেই স্রোতে ভেসে গেছে শিশু ও অন্যান্য মানুষ।

ঔরঙ্গাবাদ জেলায় পানিতে ডুবে মোট ৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জেলাশাসক শ্রীকান্ত শাস্ত্রী বলেছেন যে বহু মানুষ ‘পবিত্র স্নান’ করতে জেলার বিভিন্ন জলাশয়ে গিয়েছিলেন। বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছে। কৈমুর জেলার দুর্গাবতী নদী ও পুকুরে গোসল করতে গিয়ে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় পাটনার আমানাবাদ গ্রামে এবং সারান জেলার দাউদপুর, মানজি, তরাইয়া ও মাধৌরা থানা এলাকায় পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

সুত্রঃ TV9

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.