আওয়ামী লীগ চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে চরমপন্থী কর্মকাণ্ড বলে আজ আমাদের ওপর হামলা করেছে জামায়াত-শিবির-বিএনপির জঙ্গিরা। গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে যেসব ঘটনা ঘটছে তা রাজনৈতিক নয়। এটি একটি সম্পূর্ণ চরমপন্থী কর্মকাণ্ড। কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্য এখন বোঝা গেছে কোটা তাদের বিষয় নয়। তাদের ইস্যু হলো বাংলাদেশের সেবা করে এমন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা, যে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করে। অর্থাৎ তাদের আসল উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে ধ্বংস করা।

বাংলাদেশের নাম শুনলেই চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে, উন্নয়নের ফল আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদার চেয়ার পেয়েছে। বাংলাদেশের নাম শুনলেই সবার মুখে হাসি ফোটে। সবাই তাকে সম্মানের চোখে দেখে। কারণ আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। কিন্তু তারা এসব সহ্য করতে পারে না। এ বৈঠকে দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্তৃক সংরক্ষণ আন্দোলনের আড়ালে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ, সহিংসতা, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস ও হতাহতের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে খারাপ শক্তিকে মোকাবেলার কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সময়াবাদী দলের কে দিলীপ বড়ুয়া, ১৪ দলের সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, শিরীন আখতার, সৈয়দ নজিবুল বশর মাজভাণ্ডারী, ড. অসিত বরণ রায়, আওয়ামী লীগের ডা. আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অতি-বামপন্থীরা এখন জামায়াত-শিবিরের মানহানি করছে : আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেছেন, আমাদের অতি-বামপন্থীরা এখন শিবিরকে অপমান করছে, জামায়াতকে বদনাম করছে। তিনি এখন তাদের সঙ্গে আছেন। আসলে তার কোন আদর্শ নেই, নীতি নেই। তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। তারা কিছু চরম বামপন্থী, চরম ডানপন্থীদের সাথে যুক্ত। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আন্দোলনের খরচ কে দেয়? এত টাকা তারা পায় কোথা থেকে?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র কর্মীরা দেশের সম্মান ক্ষুণ্ন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক স্থানে নিয়ে যেতে দিনরাত কাজ করেছি, তারা কলঙ্কিত করেছে। এটি সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়। তাদের মধ্যে যদি এমন দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধ থাকত, তাহলে তারা এ কাজ করতে পারত না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা একের পর এক জনগণের লাভ নষ্ট করেছে- কার স্বার্থে তারা এসব করেছে? এই আমার প্রশ্ন.

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া ও শামসুন্নাহার হলসহ বিভিন্ন ছাত্রী হলের সংক্ষুব্ধ ছাত্র লীগ নেতৃবৃন্দ, ইডেন মহিলা কলেজ ও বদরুন্নেছা মহিলা কলেজের সংক্ষুব্ধ ছাত্র লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে প্রাণ হারানোর পর আন্দোলনরত নারী শিক্ষার্থীদের সমালোচনার মুখে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখার নেতারা। তাকে থামিয়ে মারধর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সহায়তায় ১০ নেতাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এদিকে গত ১৬ জুলাই গভীর রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হামলা থেকে বাঁচতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রেওয়া ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা বোরকা পরে বাসভবন থেকে পালিয়ে যান।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.