7 দিনেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার ইসরাইলি বোমাবর্ষণে ঘেরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় জল, স্থল ও আকাশপথে হামলার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা সরকারি নির্দেশের অপেক্ষায় আছে।
অন্যদিকে দিনরাত চলছে বোমাবাজি। বাড়ি থেকে বের হলে মৃত্যুর ভয়। এই যখন আদেশ এল- বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে। ‘নিরাপদ আশ্রয়ের’ খোঁজে ছুটছে লাখো মানুষ। খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। রবিবার পর্যন্ত গাজায় এই অবস্থা ছিল।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজার বাসিন্দাদের কাছে খাদ্য, পানি ও ওষুধ পৌঁছে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
তিনি বলছেন, গাজায় এখন মানবিক সাহায্য না পৌঁছালে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে শত শত মানুষের মৃত্যু বন্ধ করা সম্ভব নয়।
উত্তর গাজায় হামলা চালানোর জন্য ওই এলাকার বাসিন্দাদের গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। তারপর থেকে, উত্তর গাজার 1.1 মিলিয়নেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে দক্ষিণে চলে গেছে। তবে অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে।
গাজাবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে খাদ্য। অধিকাংশ মুদি দোকান বন্ধ। এমনকি খোলা দুটি দোকানেও মানুষের ভিড়। একজনকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এবং খাবার না পেয়ে ফিরে যেতে হয়। এই মানুষগুলো অর্ধাহারে দিন কাটায়।
ইসরায়েলের পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজার বাসিন্দাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এখন জীবন-মৃত্যুর বিষয়। গাজার ২ মিলিয়ন মানুষকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে জ্বালানি প্রয়োজন। জাতিসংঘ আরও বলেছে, এক সপ্তাহ ধরে গাজায় কোনো সাহায্য প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, গাজার বাসিন্দারা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। অনেক মানুষ কুয়োর দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে। এ কারণে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
গাজার হাসপাতালগুলোতে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহত ও গুরুতর আহতদের থাকার জায়গা নেই। কিন্তু বেশির ভাগ রোগীই সেবা পাচ্ছেন না। এদিকে হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী না পাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।