শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সারাদেশে অনেক থানায় আগুন দেয়া হয়। লুটপাট ও ভাংচুরও করে। অনেক জায়গায় পুলিশের তৎপরতা প্রায় থমকে যায়।
কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। সেবা নিতে আবারও থানায় যেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রাতের পাশাপাশি দিনেও থানায় সেবাপ্রার্থীদের ভিড় দেখা যায়।
মো. হাফিজুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তারা বিভিন্ন বাজারে খাবার ও পানি সরবরাহ করে। বিদ্রোহের আগে ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে তার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। রাজনৈতিক দল বদলের পর হাফিজ থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন।
ব্যবসায়ী মো. হাফিজুর রহমান যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, ছাত্রলীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আমাকে ফোন করে বলেন, পলইল বাজার ছেড়ে দিতে হবে। কারণ- আমি ওই বাজারে পানি সরবরাহ করতাম। তার কথার কোন গুরুত্ব দিলাম না। এরপর ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী আমাকে মারধর করে এবং মাথায় খুর দিয়ে আঘাত করে।
হাফিজ থানায় এসে কোনো ঝামেলা ছাড়াই অভিযোগ দায়ের করে সন্তুষ্ট। আশা করি ন্যায় বিচার হবে। রাতেও তার মতো অনেকেই থানায় আসছেন।
মো. হাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘আমি থানায় এসে কর্তব্যরত কর্মকর্তাকে বলেছি, আমি সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার পাইনি। তখন ওসি স্যার আমাকে ডেকে মামলা নেন। এখন সমর্থন পাচ্ছি, যা আগে পাইনি। প্রথমত, রাজনৈতিক সমস্যা এবং বাধা থাকতে পারে। এজন্য আমি সাহায্য পাইনি। এছাড়াও অতীতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিচার হয়নি। এরপর এসব অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নিয়ে এ মুহূর্তে কিছু বলার নেই। যারা অভিযোগ নিয়ে আসছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা ভালো সার্ভিস পাচ্ছি।
রাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা থেকে শুরু করে এলাকায় টহল, সব কিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
উত্তর পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কোনো ধরনের অপরাধ ঘটলে দ্রুত সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি এবং সাধারণ মানুষ যাতে কোনো ধরনের অপরাধের শিকার না হয় সেজন্য আমরা রাতভর কাজ করছি। আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে কোনো বাড়িতে ডাকাতি না হয়।
তিনি আরও বলেন, মানুষ নানা ধরনের অভিযোগ নিয়ে আসে, আগের মতো স্বাভাবিকভাবেই আসছে। আমরাও একই ধারাবাহিকতায় স্বাভাবিকভাবে কাজ করছি। এ ছাড়া আমরা নিজেরা সারারাত টহল দিচ্ছি। অন্যান্য কর্মকর্তারাও আমার সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন।
অপরদিকে উত্তর পূর্ব থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নিয়মিত জিডি, মামলা নেওয়া; এসব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ডিসির নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের কাজ চলছে।
শুধু সেবাই নয় অন্যান্য কাজও চলছে থানায়। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে স্থানীয় জনগণ ও কল্যাণ সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।