প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্বৈরাচারের সম্ভাবনা ঠেকাতে সংবিধানের অন্তত ১২টি অনুচ্ছেদ সংশোধনের আলোচনা চলছে। তবে সংশোধনী প্রক্রিয়া নিয়ে আইনজীবীদের ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচিত সংসদ ছাড়া এটা সম্ভব নয়। কারো কারো মতে, অন্তর্বর্তী সরকার গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনও করতে পারে।

অনেকের মতে, বর্তমান সংবিধান প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত যেকোনো ব্যক্তিকে স্বৈরশাসক হওয়ার অনুমতি দেয়। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিদ্রোহের পর সংবিধান সংশোধন বা পুনর্লিখনের দাবি ওঠে। এর আলোকে গঠন করা হয় সংবিধান সংস্কার কমিশন। অন্তত 12টি নিবন্ধ সংশোধনের জন্য আলোচনা চলছে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলছেন, মৌলিক কিছু সংশোধনী প্রয়োজন হলেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গেলে বিদ্যমান সংবিধান থেকে বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করা সম্ভব।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে একদলীয় সরকারকে টিকিয়ে রাখার রাজনৈতিক মানসিকতা ও প্রবণতা মিথ্যা নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণকে প্রতারণা করে ক্ষমতা দখলের শামিল। এগুলোই একজন ব্যক্তির সর্বশক্তিমান ক্ষমতার বিস্তারের কারণ। আমি মনে করি না সংবিধান তাকে এতে সাহায্য করেছে এবং তাকে দানব বানিয়েছে।

ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন মনে করেন, ৭০ অনুচ্ছেদ গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের প্রধান বাধা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সংবিধানে ধারণ করে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারলে স্বৈরাচারী সরকার হতে পারে না।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘যখন কোনো ব্যক্তি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, যদি (ক) তিনি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা (খ) সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, সংসদে তার আসন শূন্য হয়ে যাবে, কিন্তু সে কারণে পরবর্তী নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবেন না।’

এমতাবস্থায় কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা হবে তা নিয়ে আইনজীবীদের ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলছেন সংসদ ছাড়া এটা সম্ভব নয়, আবার কেউ বলছেন গণভোটের মাধ্যমে সংশোধন করা যেতে পারে।

ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জনগণের সমর্থন পেলে এই সরকার ম্যান্ডেট নিতে পারবে। হ্যাঁ-না ভোটের ব্যবস্থা থাকতে পারে। এর সাংবিধানিক স্বীকৃতি রয়েছে। এর মাধ্যমে আগামী সংসদ তা পাস করবে। কোনো বাধা থাকবে না।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরাও মনে করেন, রাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আচরণের পরিবর্তন না হলে হাততালি দিয়ে সংবিধান সংশোধন করে কোনো লাভ হবে না।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.