রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা যুবদল এখন সবার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এমন পরিস্থিতিতে কিশোর গ্যাং ও অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথ কার্যক্রম শুরু করেছে। কর্মসূচির আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত সংসদীয় কমিটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে অন্তত দুই শতাধিক যুবদল রয়েছে। এসব চক্রের সদস্যদের মধ্যে ১০ থেকে ৫০ জন রয়েছে। যারা ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে সহায়তা, ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ন্ত্রণ, ক্যাবল টিভি (ডিআইএসএইচ) ব্যবসা এবং আবর্জনা ব্যবসা, মেয়েদের শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানি, হামলা, মারধর ইত্যাদির সাথে জড়িত।
তাই কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনার পরও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাঙ্খিত ফল এখনো পাওয়া যায়নি। সদ্য সমাপ্ত সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ কর্মসূচির কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সংসদে দেওয়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেওয়া পদক্ষেপগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠিয়েছে। ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট নম্বর প্রদান করা হয়, পরপর দিন অনুপস্থিতির ফলে জরিমানা এবং স্কুল থেকে বরখাস্তের সতর্কতা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রম চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তাদের অভিভাবকদের জানাতে বলা হয়েছে এবং অভিভাবক সভার আয়োজন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্কুলে আকৃষ্ট করতে বছরের শুরুতেই বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক ও উপবৃত্তি প্রদান শুরু হয়েছে। প্রতি বছর প্রাথমিক শিক্ষায় প্রশংসনীয় অবদানের জন্য এবং ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ’ উদযাপনের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুষ্টু কিশোরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার পদক্ষেপ নিয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।