আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈধ অভিবাসনের ওপর জোর দিয়েছেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমিকরা এখানে খুব ভালো কাজ করছে। তার যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতা আছে। তবে আমি অবৈধ শ্রমিক চাই না।
ইতালির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পালাজো চিগিতে প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। দুই নেতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অনথিভুক্ত বাংলাদেশি অভিবাসী, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
জর্জিয়া মেলোনি বলেন, তারা চায় না অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীরা ইতালিতে থাকুক কারণ স্থানীয় জনগণও তা চায় না। মোমেন বলেন, তারা বাংলাদেশের জন্য বৈধভাবে জনশক্তি পাঠানোর দরজা খুলে দিয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিবন্ধিত ও অনথিভুক্ত বাংলাদেশীরা উভয় দেশের কল্যাণে কাজ করছে। যদিও বাংলাদেশও অবৈধ অভিবাসনকে নিরুৎসাহিত করে, শেখ হাসিনা বলেন, আমি অবৈধ অভিবাসনের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাস করি।
অন্যান্য দেশ থেকে অবৈধভাবে ইতালিতে আসা বাংলাদেশি অভিবাসীদের বন্ধ করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইতালি কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
তাঁর সরকার বাংলাদেশে 100টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং 39টি হাই-টেক পার্কের উন্নয়ন করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ইতালিকে বিশেষ অঞ্চল ও পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বললেন, ‘তুমি চাইলে আমি তোমার জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ব্যবস্থা করব।
জর্জিয়া মেলোনি বলেন, ইতালি ও বাংলাদেশ যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করতে পারে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে চামড়াজাত পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে ইতালির প্রতি আহ্বান জানান। এর প্রতিক্রিয়ায় ইতালি বিষয়টি নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন করায় ইতালিকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে ইতালিকে জোরালো সমর্থন অব্যাহত রাখতে বলেন।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করে বলেন, অবশ্যই তিনি বাংলাদেশে আসবেন।
উভয় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শক্তি ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জ্বালানি সহযোগিতা এবং ৫ বছরের সাংস্কৃতিক সহযোগিতার একটি এমওইউ বিনিময় করেছেন।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক ড. নজরুল ইসলাম এবং ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সূত্রঃ বাস