কাতারের দোহায় রোববার থেকে তালেবানের সঙ্গে প্রায় ২৫টি দেশের প্রতিনিধিদের দুই দিনের বৈঠক শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত সভায় আফগান নারীদের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক প্রধান রোজমেরি ডিকার্লো এই ধরনের সমালোচনার জবাব দিয়ে বলেছেন যে সভার প্রতিটি অধিবেশনে নারীর অধিকারের কথা তোলা হবে। ডিকার্লো দুদিনের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
2021 সালের আগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা নেওয়ার পর তালেবানের সাথে এই ধরনের প্রথম বৈঠক। কিন্তু “এটি (তালেবানদের) স্বীকৃতি দেওয়ার মত বৈঠক নয়,” বলেছেন ডিকার্লো। তিনি বলেন, ‘সেখানে (বৈঠকে) তালেবান নিয়ে নয়, আফগানিস্তান এবং সে দেশের জনগণ নিয়ে কথা হবে।’ ডিকার্লো আরও বলেন, টেকসই শান্তি, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা এবং মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
অন্যদিকে, তালেবান বলছে, তারা অর্থনীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, মাদক পাচারের মতো বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী।
তবে জাতিসংঘ আফগান নারীদের বৈঠকে না আসায় সমালোচনা করছে। আফগানিস্তানের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক কমিশনার শবনম সালেহি বলেছেন, আফগান নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া দোহার বৈঠক হবে “অসম্পূর্ণ”।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফয়জুল্লাহ জালাল বলছেন, ‘আলোচনা থেকে মানবাধিকার ও নারীর অধিকার বাদ দেওয়া জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতাকে দুর্বল করে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসানও তাই মনে করেন৷ তিনি বলেন, নারীদের না রাখলে তালেবানদের অসদাচরণকে বৈধতা দেওয়ার ঝুঁকি থাকবে। অধিকন্তু, হাসান আরও বিশ্বাস করেন যে এটি নারীর অধিকার এবং অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের রক্ষক হিসাবে জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুন্ন করে।
তবে জাতিসংঘের কর্মকর্তা ডিকার্লোর মতে, তালেবানদের সঙ্গে দুদিনের বৈঠকটি তাদের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য। তিনি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই এটি একটি প্রক্রিয়া।
আমরা অনেক সমালোচিত হই: সেখানে নারীরা কেন নেই? আফগান নারী নেই কেন? কেন সুন্দর সমাজ হবে না? এটি একটি আন্তঃআফগান সংলাপ নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি একদিন আমরা সেই পরিস্থিতিতে যেতে পারব। কিন্তু এখন আমরা সেই অবস্থায় নেই।
তবে অনেক সমালোচনার পর জাতিসংঘ দোহায় আফগান মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়।